জাদুকাটা নদীর বালুমহালে টোলের নামে চাঁদাবাজি বন্ধের দাবি
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার জাদুকাটা নদীর বালুমহালে টোল আদায়ের নামে চাঁদাবাজি ও ড্রেজার দিয়ে অবাধে বালু উত্তোলন বন্ধের দাবিতে সমাবেশ করেছেন ব্যবসায়ী ও শ্রমিকেরা। বুধবার বিকেলে নদীর ঘাগড়া কুরিয়ার পাড় এলাকায় জাদুকাটা নদীর বালু ব্যবসায়ী ও শ্রমিক সমবায় সমিতির উদ্যোগে এ সমাবেশ হয়।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, নদীর বালুমহালে টোল আদায়ের নামে চাঁদাবাজি ও জুলুম হচ্ছে। প্রতি ঘনফুট বালুর জন্য ৫ টাকা ২৫ পয়সা টোল আদায় করার কথা, অথচ আদায় করা হচ্ছে ১৫ টাকা । টাকা না দিলে নৌকা ও বাল্কহেড আটকে রাখা হয়। শ্রমিকদের নির্যাতন করা হয়। এই অতিরিক্ত টোল আদায় বন্ধ করতে হবে। সরকার নির্ধারিত হারের বেশি টোল করতে দেওয়া হবে না। প্রকৃতি ও পরিবেশের ক্ষতি হয়, এমন কাজ করা যাবে না।
সমিতির সভাপতি শহীদ মিয়ার সভাপতিত্বে ও সমাজকর্মী সুজন মিয়ার সঞ্চালনায় সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন তাহিরপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুজ্জামান; বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান আবুল কাশেম। সমাবেশে অন্যদের মধ্যে শিক্ষক মোহাম্মদ চান মিয়া, ব্যবসায়ী মনজুর আলী, আমীর শাহ, আজিজুর রহমান, খয়রাত মিয়া, বিল্লাল মিয়া প্রমুখ বক্তব্য দেন।
একই দাবিতে গত সোমবার নদীর আনোয়ারপুর এলাকায় ছাত্র-জনতার ব্যানারে সমাবেশ হয়। শনিবার তাহিরপুর উপজেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে টোল আদায় ও অবাধে বালু উত্তোলন বন্ধের দাবি এবং ইজারা প্রদানে অনিয়মের অভিযোগ তুলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের তিনজন উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, নদী থেকে প্রতিদিন অবৈধভাবে কোটি টাকার চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। নদী থেকে ড্রেজারে ও নদীর পাড় কেটে অবাধে বালু উত্তোলনের ফলে প্রকৃতি ও পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। ইজারা–সীমানার বাইরে থেকে বালু তোলা হচ্ছে। নদীর পাড় কেটে বালু উত্তোলন বন্ধে স্থানীয় কয়েকটি গ্রামের মানুষ রাত জেগে পাহারা দিচ্ছেন।
স্থানীয় প্রশাসন, ব্যবসায়ী ও বাসিন্দা সূত্রে জানা গেছে, জাদুকাটা নদীর দুটি বালুমহাল এবার প্রায় ৪৪ কোটি টাকায় ইজারা দেওয়া হয়েছে। অথচ গত বছরের ইজারামূল্য ছিল প্রায় ৬৯ কোটি টাকা। এবার এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা ও জনপ্রতিনিধি। তাঁরা প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গে যোগসাজশ করে সরকারের প্রায় ১৫ কোটি টাকা ইজারা কমিয়ে দিয়েছেন।
ইজারাদারদের একজন স্থানীয় ঘাগটিয়া গ্রামের বাসিন্দা ও জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ মুজিবুর রহমান বলেন, তাঁরা প্রতি ঘনফুট বালুর জন্য ১৫ টাকা টোল নিচ্ছেন। সীমানার বাইরে, ড্রেজার বা নদীর পাড় কেটে বালু তোলা হচ্ছে না।