কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নেতাদের সঙ্গে ছাত্রলীগ ও কর্মকর্তা সমিতির বাগ্বিতণ্ডা, ধস্তাধস্তি
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির নেতাদের সঙ্গে ছাত্রলীগ ও কর্মকর্তা সমিতির নেতা-কর্মীদের বাগ্বিতণ্ডা ও ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটেছে। আজ সোমবার বিকেল পাঁচটার দিকে উপাচার্যের দপ্তরে এ ঘটনা ঘটে। উপাচার্যের (ভিসি) সঙ্গে নবনির্বাচিত শিক্ষক সমিতির নেতাদের বৈঠক চলাকালীন হঠাৎ ছাত্রলীগ ও কর্মকর্তা সমিতির সভাপতির নেতৃত্বে একদল লোক শিক্ষকদের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। এই সময়ে শিক্ষকদের সঙ্গে ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির নবনির্বাচিত কমিটির নেতারা উপাচার্যের দপ্তরে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে যান। শিক্ষকেরা উপাচার্যের সঙ্গে তাঁদের বিভিন্ন দাবিদাওয়া নিয়ে কথা বলেন। একই সঙ্গে জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন করে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা, পদোন্নতি ও আপগ্রেডেশন নিয়ে কথা তোলেন। তাঁরা বিভিন্ন অনিয়ম নিয়ে কথা বলেন। একপর্যায়ে উপাচার্য নিয়মের বাইরে কোনো কাজ করবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন। তখন উপাচার্যের সঙ্গে সমিতির নেতাদের উচ্চবাচ্য হয়। তখন কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ জাকির হোসেন ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রেজা ই এলাহীর নেতৃত্বে ছাত্রলীগের একদল নেতা-কর্মী ও বহিরাগত উপাচার্যের দপ্তরে ঢুকে পড়েন। তাঁরা উপাচার্যের সঙ্গে খারাপ আচরণের অভিযোগ এনে শিক্ষক নেতাদের গালিগালাজ করেন। এ সময় শিক্ষকদের মারার জন্যও কেউ কেউ তেড়ে আসেন। তখন দুই পক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়।
পরে প্রক্টরিয়াল বডির সদস্য ও হল প্রাধ্যক্ষরা এসে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে পরিস্থিতি শান্ত হয়। পরে উপাচার্যের সঙ্গে শিক্ষকেরা পুনরায় বৈঠকে বসেন। তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকীর অপসারণ দাবি করেন। একই সঙ্গে শিক্ষকদের নিরাপত্তা দাবি করেন। উপাচার্য এই দাবি নিয়ে কোনো কথা না বলে দপ্তর ত্যাগ করে বাংলোতে চলে যান।
অভিযোগ প্রসঙ্গে কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ জাকির হোসেন বলেন, ‘আমরা ভিসি স্যারের সঙ্গে একটি বিষয়ে দেখা করতে যাই। উনার কক্ষে চিল্লাচিল্লি শুনে ঢুকে পড়ি। পরে দেখি ভিসি স্যারের সঙ্গে উচ্চবাচ্য হচ্ছে।’
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রেজা ই এলাহী বলেন, ‘উপাচার্যের দপ্তরে আওয়াজ শুনে আমরা যাই।’
শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান বলেন, ‘উপাচার্যের দপ্তরে এই ধরনের আচরণ কোনোভাবেই কাম্য নয়। আমরা উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করতে যাই। হঠাৎ অন্যরা ঢুকে ঝামেলা করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন। আমরা তাঁর পদত্যাগ চাই। প্রক্টর পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আমরা কর্মসূচি চালাব।’
শিক্ষক নেতাদের অভিযোগ নাকচ করে প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকী বলেন, ‘সবার সামনে ঘটনা ঘটেছে। আমি নিরাপত্তা দেওয়ার চেষ্টা করেছি।’
উপাচার্য এ এফ এম আবদুল মঈন বলেন, ‘আমাকে শিক্ষক সমিতি বিভিন্ন দাবিদাওয়া নিয়ে কথা বলেছে। তাঁরা আমাকে মিথ্যাবাদী বলেছে। আমি নাকি বিশ্ববিদ্যালয়ে সন্ত্রাসী পালন করি। এখানে আমি কোনো অত্যাচারের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় চালাতে চাই না। একজন তো আমাকে আক্রমণই করেছে। আমি তাকে সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেছি।’