গাজীপুরে দুই কারখানায় অসন্তোষ, বাকিগুলোতে উৎপাদন স্বাভাবিক

গাজীপুরের মেম্বার বাড়ি এলাকায় সিল্কেন সুইং লিমিটেড কারখানার শ্রমিকদের বিক্ষোভ। শনিবার দুপুরেছবি: প্রথম আলো

গাজীপুরে দুটি ছাড়া বাকি কারখানাগুলোতে স্বাভাবিকভাবে কাজ চলছে। আজ শনিবার নগরের কোনাবাড়ী এলাকায় বেতন বৃদ্ধিসহ ১৯ দফা দাবিতে যমুনা ডেনিমস লিমিটেড কারখানার শ্রমিক ও কর্মচারী এবং সদর উপজেলার মেম্বার বাড়ি এলাকায় সিল্কেন সুইং কারখানার শ্রমিকেরা ১৮ দফা দাবিতে বিক্ষোভ করছেন।

আজ সকাল সাড়ে আটটার দিকে কোনাবাড়ী-কাশিমপুর আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন যমুনা গ্রুপের মালিকানাধীন যমুনা ডেনিমস লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা। অন্যদিকে সিল্কেন সুইং কারখানার শ্রমিকেরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন।

পুলিশ জানায়, মহানগরের কাশিমপুর এলাকায় অবস্থিত যমুনা ডেনিমস লিমিটেড কারখানার কর্মচারীরা বেতন বৃদ্ধিসহ ১৯ দফা দাবিতে সকাল থেকে বিক্ষোভ করছেন। ছুটির দিন কাজ করালে এক দিনের হাজিরা দাবি, হাজিরা বোনাস ৯০০ টাকা করা, সব শ্রমিক এবং কর্মচারীর সন্ধ্যা সাতটার পর টিফিন বিল ৫০ টাকা ও ১১টার পর রাত্রিকালীন বিল ১০০ টাকা করা, সর্বোচ্চ সাত কর্মদিবসের মধ্যে শ্রমিক–কর্মচারীদের বেতন পরিশোধ, চাকরির বয়স ছয় মাস হলে মূল বেতনের সমপরিমাণ ঈদ বোনাস দেওয়ার দাবিতে আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করেন তাঁরা। খবর পেয়ে শিল্প পুলিশ তাঁদের নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। পরে সেনাসদস্যরা কারখানায় গিয়ে বেলা একটার পর মালিক, শ্রমিক ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বৈঠকে বসেন। বেলা আড়াইটার সময় আঞ্চলিক সড়ক ছেড়ে দিয়ে তাঁরা আলোচনায় বসেন।

যমুনা ডেনিমস লিমিটেডের কমপ্লায়েন্স ম্যানেজার সেলিম রেজা বলেন, স্টাফরা বেতন বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলন করছেন। সকাল থেকে কাউকে কারখানার ভেতরে ঢুকতে দিচ্ছেন না। এখন আলোচনা করে সমাধান করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

শিল্প পুলিশ জানায়, গাজীপুর সদর উপজেলার মেম্বার বাড়িতে সিল্কেন সুইং কারখানার শ্রমিকেরা সকাল আটটা থেকে হাজিরা বোনাস, টিফিন বিল, ওভার টাইম ও চাকরিচ্যুত না করাসহ ১৮ দফা দাবিতে কারখানার সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। একপর্যায়ে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করেন। এতে মহাসড়কে চলাচলকারী যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়েন। শিল্প পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা করে দাবি মেনে নেওয়ার কথা জানালে দুপুর ১২টার দিকে তাঁরা মহাসড়ক ছেড়ে দেন।

এদিকে দুটি কারখানা বাদে গাজীপুরের বাকি ২ হাজার ৬০০ পোশাক কারখানা ও অন্যান্য ৫০০ কারখানায় উৎপাদন প্রক্রিয়া স্বাভাবিক আছে। সকালে সেসব কারখানায় শ্রমিকেরা কাজে যোগ দেন।

গাজীপুর শিল্প পুলিশ-২ কোনাবাড়ী অঞ্চলের সহকারী পুলিশ সুপার মো. জাহাঙ্গীর আলম প্রথম আলোকে বলেন, যমুনা গ্রুপের কর্মচারীরা বেতন বৃদ্ধিসহ ১৯ দফা দাবি আদায়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। তবে এখন তাঁদের দাবির বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা চলছে। ওই সড়কেও যান চলাচল স্বাভাবিক আছে।