চট্টগ্রাম-রাজশাহী থেকে নোয়াখালীতে আনা হয় দেশি-বিদেশি অস্ত্র, ১৭টি উদ্ধার
নোয়াখালী জেলার সেনবাগ ও সোনাইমুড়ী উপজেলায় পরিচালিত বিশেষ অভিযানে ১৭টি দেশি-বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র ও ২৭৭টি গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। সেই সঙ্গে আটক করা হয়েছে সন্ত্রাসী চক্রের চার সদস্যকে। জব্দ করা হয়েছে অস্ত্র পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত পিকআপ ভ্যান। পুলিশ বলছে, চট্টগ্রাম ও রাজশাহী থেকে নোয়াখালীতে আনা হয় এসব দেশি-বিদেশি অস্ত্র।
আজ মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে চারটায় জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে গণমাধ্যমকে এসব তথ্য জানান পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) আহছান হাবীব। উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত ডিআইজি নেছার উদ্দিন আহমেদ, জেলা পুলিশ সুপার আবদুল্লা-আল-ফারুক, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিজয়া সেনসহ জেলা পুলিশের কর্মকর্তারা।
প্রেস ব্রিফিংয়ে ডিআইজি আহছান হাবীব উল্লেখ করেন, নোয়াখালী জেলাকে অস্থিতিশীল করার জন্য একটি সন্ত্রাসী চক্র বিপুলসংখ্যক অস্ত্র মজুত করার চেষ্টা করছে বলে গোপন সংবাদ পান তাঁরা। সেনবাগ ও বেগমগঞ্জ থানার একটি যৌথ পুলিশ দল সেনবাগের সেবারহাট বাজারে সোমবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে সন্দেহভাজন একটি পিকআপ ভ্যানসহ দুজনকে আটক করে। পিকআপ ভ্যানটি তল্লাশি করে পলিথিনের প্যাকেটে মোড়ানো ১২টি দেশি আগ্নেয়াস্ত্র (৮টি বন্দুক ও ৪টি এলজি) উদ্ধার করা হয়। এরপর ওই তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা তিন-চার দিন আগে অস্ত্রের আরেকটি চালান সোনাইমুড়ী উপজেলার দেওটি গ্রামের এক ব্যক্তির কাছে পৌঁছে দেওয়ার তথ্য দেন। পরে তাঁদের নিয়ে একই রাতে দেওটি গ্রামে অভিযান পরিচালনা করে মো. বাহার (৩০) নামে আরও এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়। আটকের পর বাহারের দেওয়া তথ্য ও দেখানো মতে তাঁর বাড়ির রান্নাঘর থেকে ৯টি ম্যাগাজিনসহ ৫টি বিদেশি পিস্তল উদ্ধার করা হয়।
ডিআইজি আহছান হাবীব বলেন, একসঙ্গে এতগুলো অস্ত্র উদ্ধার হওয়ার ঘটনা উদ্বেগের বিষয়। অস্ত্রগুলো মজুতের নেপথ্যে রাজনৈতিক কোনো উদ্দেশ্য রয়েছে কি না, খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এরই মধ্যে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই চক্রের সঙ্গে আরও কারা কারা জড়িত রয়েছেন, তাঁদেরও আইনের আওতায় আনা হবে। তবে আটক ব্যক্তিরা কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কি না, তা এখনই গণমাধ্যমকর্মীদের জানাতে রাজি হননি।
জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সেনবাগে অস্ত্রসহ আটক ব্যক্তিরা হলেন চাটখিল উপজেলার ছয়ানী টগবা গ্রামের বাদল হোসেন (২১), রামনারায়ণপুর ইউনিয়নের রুইতখালী গ্রামের মো. রবিন (২৮), কুমিল্লার লালমাই উপজেলার সৈয়দপুর গ্রামের মুরাদ হোসেন (২২)। আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সোনাইমুড়ী ও সেনবাগ থানায় অস্ত্র ও মাদক আইনে পৃথক মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
বেগমগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাজমুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, উদ্ধার হওয়া অস্ত্রগুলোর কিছু চট্টগ্রাম থেকে আর কিছু রাজশাহী থেকে নোয়াখালীতে আনা হয়েছে। তবে এ পর্যন্ত কত সংখ্যক অস্ত্র নোয়াখালীতে আনা হয়েছে, সেটি এখনো পুলিশ পুরোপুরি নিশ্চিত হতে পারেনি।
এ ছাড়া একই অভিযানে সেনবাগের সেবারহাট বাজারে একটি পিকআপ থেকে ১২ কেজি গাঁজাসহ আনোয়ার হোসেন (২৬) নামে একজনকে আটক করা হয়।