গাজী টায়ার কারখানার আগুন এখনো নেভেনি, চলছে লুটপাটও
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের রূপসী এলাকায় লুটপাটের সময় গাজী টায়ার কারখানায় দেওয়া আগুন ২০ ঘণ্টায়ও নেভেনি। গতকাল রোববার রাত নয়টায় লাগা আগুন আজ সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্তও জ্বলতে দেখা গেছে। রোববার দুপুরে কারখানাটিতে শুরু হওয়া লুটপাট গতকাল বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত পুরোপুরি থামেনি।
ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক (ঢাকা) লেফটেন্যান্ট কর্নেল রেজাউল করিম বলেন, কারখানাটির একটি ছয়তলা ভবনে এখনো আগুন জ্বলছে। আধুনিক সব সরঞ্জাম ব্যবহার করে আগুন নেভানোর চেষ্টা চলছে। আগুন আর ছড়ানোর কোনো শঙ্কা নেই। কারখানায় থাকা টায়ার প্রস্তুতকারক নানা দাহ্য পদার্থের কারণে আগুন নেভাতে সময় লাগছে। আগুন পুরোপুরি নেভানোর পর কারখানার ভেতরে নিখোঁজ ব্যক্তিদের সন্ধান করা হবে।
এদিকে সোমবার বিকেলেও কারখানার আশপাশে গাজী টায়ারসহ বিভিন্ন স্থাপনায় দুর্বৃত্তদের লুটপাট করতে দেখা গেছে। প্রায় ৪৫ একর জমির ওপর স্থাপিত কারখানাটির সামনে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও শিক্ষার্থীদের অবস্থানের কারণে কারখানার মূল অংশে লুটপাট হচ্ছে না। তবে সুবিশাল এই কারখানার চারপাশের বিভিন্ন অরক্ষিত অংশে লুটপাট চলছে। তাঁরা কারখানা থেকে বিভিন্ন যন্ত্রাংশ, স্টিল, প্লাস্টিক ও তামা লুট করে নিয়ে যাচ্ছেন।
লুটপাটে অংশ নেওয়া কয়েকজনের সঙ্গে প্রথম আলোর কথা হয়েছে। লুটপাটের বিষয়ে কথা বলতে গেলে কেউ কেউ এড়িয়ে গেছেন, কেউবা খেপে উঠছেন। তবে অন্তত তিনজন লুটপাটকারী জানিয়েছেন, ৫ আগস্টের পর থেকে এলাকার লোকজন যে যার মতো লুটপাট করেছেন। লোকজনের দেখাদেখি তাঁরাও লুটপাটে অংশ নিয়েছেন। তবে তাঁদের কেউই নিজেদের নাম–পরিচয় জানাননি।
সকালে কারখানার সহকারী মহাব্যবস্থাপক সাইফুল ইসলাম জানান, রোববার দুপুরে দুটি গ্রুপের হাজারো লোক কারখানায় ঢুকে পড়েন। তাঁদের বাধা দেওয়ার মতো পরিস্থিতি ছিল না। লুটপাটের সময় রাত নয়টার দিকে কারখানাটির ছয়তলা ভবনটির নিচতলায় আগুন লাগিয়ে দেন লুটপাটকারীরা।
দুপুরে লুটপাট শুরু হলে পুলিশসহ একাধিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বিষয়টি জানানো হলেও কেউ এগিয়ে আসেনি বলে অভিযোগ করেন তিনি। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে এ অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার (গ-সার্কেল) হাবিবুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘পুলিশ কোনো অবহেলা করেনি। আমরা কারখানার নিরাপত্তায় সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।’
লুটপাটের বিষয়ে রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আহসান মাহমুদ রাসেল বলেন, ‘কারখানার লুটপাট ঠেকাতে পুলিশ, শিল্প পুলিশ, সেনাবাহিনী ও স্বেচ্ছাসেবীরা কাজ করছে। আমি সবাইকে অনুরোধ করেছি, তাঁরা যেন আরও শক্ত অবস্থান নেন।’