সেনাবাহিনীর আটক করা যুবলীগ নেতাকে ছেড়ে দিল পুলিশ

যুবলীগ নেতা দুলাল হোসেনছবি : সংগৃহীত

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের করা তালিকায় মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে নাম রয়েছে তাঁর। মাদকসহ বিভিন্ন অপরাধের অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে বিচারাধীন রয়েছে অন্তত পাঁচটি মামলা। এসব মামলায় জামিনে থাকলেও সম্প্রতি ফেনীতে ছাত্র-জনতার সমাবেশে গুলি করা এবং ব্যবসায়ীকে মারধর ও চাঁদাবাজির অভিযোগে করা নতুন দুটি মামলার এজাহারভুক্ত আসামি তিনি। গত শুক্রবার রাতে তাঁকে আটক করে থানায় সোপর্দ করলেও ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ।

পুলিশের ছেড়ে দেওয়া এই আসামির নাম দুলাল হোসেন ওরফে বাটা দুলাল (৪০)। তিনি উপজেলার চর চান্দিয়া ইউনিয়নের ভূঞা বাজার এলাকার আবু তাহেরের ছেলে। ইউনিয়ন যুবলীগের সহসভাপতির পদে রয়েছেন তিনি।

মামলার বাদী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ফেনীর মহিপালে গত ৪ আগস্ট ছাত্র-জনতার সমাবেশে গুলি চালিয়ে অন্তত ৯ জনকে হত্যার ঘটনা ঘটে। এ ছাড়া ঘটনাস্থলে গুলিবিদ্ধ হন অনেকেই। গুলিবিদ্ধদের একজনের বাবা বাহার মিয়া বাদী হয়ে ফেনী সদর মডেল থানায় একটি মামলা করেন। এই মামলায় দুলাল হোসেন এজাহারভুক্ত আসামি।

একইভাবে গত ১০ অক্টোবর রাতে সোনাগাজী পৌর শহরের ফল ব্যবসায়ী মো. আবদুল্যাহ বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। মামলায় দুলালসহ আসামিদের ২৩ আসামির বিরুদ্ধে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ভাঙচুর ও চাঁদাবাজির অভিযোগ আনা হয়।

মামলার সূত্র ধরে গত শুক্রবার রাতে সোনাগাজী উপজেলার ভূঁইয়া বাজার এলাকা থেকে দুলালকে আটক করে সেনাবাহিনী। পরে তাঁকে সোনাগাজী থানায় হস্তান্তর করা হয়। তবে পুলিশ রাতেই তাঁকে ছেড়ে দেয়।

পুলিশ কর্মকর্তাদের দাবি, দুলালের বিরুদ্ধে নতুন দুটি মামলার তথ্য তাঁরা খুঁজে পাননি। আগের পাঁচটি মামলার তথ্য পেলেও এসব মামলায় জামিন থাকায় তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। জানতে চাইলে সোনাগাজী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুজ্জামান বলেন, চাঁদাবাজির অভিযোগে করা মামলায় দুলালের নাম থাকলেও বাবার নাম আবু তাহেরের পরিবর্তে আনিছুল হক লেখা রয়েছে। ফলে সেই মামলার তথ্য তাৎক্ষণিকভাবে জানা সম্ভব হয়নি। তাই দুলালকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

ওসি মো. কামরুজ্জামান আরও বলেন, তিনিসহ বর্তমানে থানায় কর্মরত পুলিশ সদস্যরা নতুন হওয়ায় দুলালকে কেউ চিনতে পারেননি। সকালে তাঁর বিষয়ে জেনে তাঁকে গ্রেপ্তার করতে একাধিক জায়গায় অভিযান চালানো হয়। অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন ওসি।

চাঁদাবাজির মামলাটির বাদী মো. আবদুল্লাহ বলেন, ‘আটকের পর আসামিকে ছেড়ে দেওয়া দুঃখজনক। এ বিষয়ে আমি থানা-পুলিশের বিরুদ্ধে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে অভিযোগ করব।’

জানতে চাইলে সোনাগাজী সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. তাসলিম হুসাইন প্রথম আলোকে বলেন, তিনি ঢাকায় একটি প্রশিক্ষণে রয়েছেন। এ বিষয়ে থানার ওসি তাঁকে কিছুই জানাননি। বিষয়টি তিনি গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখবেন।