বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ক্ষয়ক্ষতি বেশি দেখিয়ে অর্থ লোপাটের চেষ্টা, দুদকের অভিযান

বাগেরহাট জেলা পরিষদে দুদকের অভিযান। মঙ্গলবার দুপুরেছবি: প্রথম আলো

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকে পুঁজি করে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বেশি দেখিয়ে অর্থ লোপাটের চেষ্টার অভিযোগে বাগেরহাট জেলা পরিষদে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মঙ্গলবার দুপুরে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. সাইদুর রহমানের নেতৃত্বে এ অভিযান চালানো হয়।

এর আগে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় জেলা পরিষদ চত্বরের ভাস্কর্য, ফটক, সিসিটিভি ক্যামেরা ভাঙচুরের ঘটনায় ২০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতির তালিকা দেওয়া হয়। তারই পরিপ্রেক্ষিতে দুদকের দলটি সরেজমিনে পরিদর্শন করে ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি যাচাই করে। এ সময় জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ঝুমুর বালাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন দুদক কর্মকর্তারা। অভিযানের সময় নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন ঝুমুর বালা।

দুদক ও জেলা পরিষদ সূত্রে জানা যায়, গত ১২ আগস্ট স্থানীয় সরকার বিভাগের পক্ষ থেকে দেশের চলমান পরিস্থিতিতে জেলা পরিষদের কাছে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ চাওয়া হয়। এরপর ১৩ আগস্ট জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ঝুমুর বালার স্বাক্ষরে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণের একটি তালিকা স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব বরাবর পাঠানো হয়। চিঠিতে জেলা পরিষদ চত্বরে ভাস্কর্য, ফটক, প্রাচীর ও সিসিটিভি ক্যামেরা ভাঙচুরের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। এতে আনুমানিক ২০ লাখ টাকা ক্ষতির পরিমাণ দেখানো হয়।

দুদকের সহকারী পরিচালক মো. সাইদুর রহমান বলেন, অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তাঁরা জেলা পরিষদের ফটক, ভবনের সামনে থাকা ভাস্কর্য, প্রাচীরসহ বিভিন্ন স্থাপনা পরিদর্শন করেন। প্রাথমিকভাবে তাঁদের কাছে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এক লাখ টাকার বেশি নয় বলে মনে হয়েছে। পরিদর্শনের সময় প্রাপ্ত তথ্য ও কিছু কাগজপত্র নিয়েছেন। সেগুলো পর্যালোচনার পর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দুদক প্রধান কার্যালয়ে প্রতিবেদন পাঠানো হবে।

অভিযানকালে ঝুমুর বালা দুদককে বলেন, ‘মন্ত্রণালয়ে ২০ লাখ টাকা ক্ষয়ক্ষতি দেখিয়ে পাঠানো কাগজে আমি সই করিনি। ওই দিন আমি ঢাকায় ছিলাম। অফিসের অন্য এক কর্মকর্তা আমার সঙ্গে কথা বলে ওই চিঠি পাঠিয়েছেন।’

মসজিদ-মাদ্রাসা থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বরাদ্দ থেকে কমিশন নেওয়াসহ জেলা পরিষদের নানা অনিয়মের বিষয়ে সাংবাদিকদের তোলা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি বলেন, ‘আমি কারও কাছ থেকে একটি টাকাও নিইনি। এমন কোনো কিছুর সঙ্গে আমি যুক্ত না। এত দিন আপনারা যেমন কথা বলতে পারছিলেন না, আমিও পারছিলাম না।’