কেরানীগঞ্জে সাইফুল হত্যা মামলায় প্রধান আসামি আফতাবসহ গ্রেপ্তার ১১
ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে রাতভর মারধর ও নির্যাতন করে সাইফুল ইসলাম ওরফে রাসেল হত্যা মামলার প্রধান আসামি স্বেচ্ছাসেবক লীগ থেকে বহিষ্কৃত নেতা আফতাব উদ্দিন ওরফে রাব্বীসহ ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে গ্রেপ্তার আসামিদের মধ্যে আফতাব ছাড়া বাকি ব্যক্তিদের নাম জানা যায়নি।
গ্রেপ্তারের বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন ঢাকা জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (কেরানীগঞ্জ সার্কেল) শাহাবুদ্দীন কবীর। তিনি বলেন, চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মামলার প্রধান আসামি আফতাব উদ্দিনসহ ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে রয়েছেন। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এ বিষয়ে আগামীকাল বুধবার ঢাকা জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত জানানো হবে।
প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে সাইফুল ইসলামকে মুঠোফোনে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের শুভাঢ্যা ইউনিয়নের তেলঘাট সড়ক এলাকায় পারভীন টাওয়ারের নিচতলায় ব্যক্তিগত কার্যালয়ে ডেকে নেন আফতাব উদ্দিন। রাতভর নির্যাতনে সেখানে সাইফুলের মৃত্যু হয় বলে তাঁর পরিবারের অভিযোগ।
আফতাব উদ্দিন দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। যদিও ঘটনার পর তাঁকে বহিষ্কার করেছে সংগঠনটি। আফতাবের বাবা শুভাঢ্যা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি বাছের উদ্দিন, চাচা ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও শুভাঢ্যা ইউপি চেয়ারম্যান ইকবাল হোসেন। সাইফুলকে হত্যার বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন তাঁরা। তবে নির্যাতনের বেশ কিছু ভিডিও ফুটেজ ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ায় বিষয়টি জানাজানি হয়ে যায়।
একটি ভিডিওতে দেখা যায়, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আফতাব উদ্দিনকে আহত অবস্থায় রাসেল বলছেন, ‘আব্বা, আপনি আমার বাপ। আব্বা, আব্বা, আব্বা আপনি আমাকে বাঁচান।’ এমন আকুতি অবস্থায়ও কয়েকজন যুবক রাসেলকে টানাহেঁচড়া করে পেছন দিকে নিয়ে যাচ্ছেন। আরও একটি ভিডিওতে দেখা যায়, রাসেল অচেতন অবস্থায় মেঝেতে পড়ে আছেন। এ অবস্থায়ও এক ব্যক্তি তাঁকে মারধর ও গালিগালাজ করছেন। আরও একটি ভিডিওতে দেখা যায়, মেঝেতে রাসেলের নিথর দেহ পড়ে আছে। তাঁর শরীরের বিভিন্ন স্থানে নীল ফুলা জখম ও নির্যাতনের চিহ্ন। নাক দিয়ে রক্ত ঝরছে।
ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ, আফতাব উদ্দিন ও তাঁর নিয়ন্ত্রণাধীন ‘আব্বা’ বাহিনীর ১৫ থেকে ২০ জন সাইফুলকে হত্যা করেছে। এ ঘটনায় দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় আফতাব উদ্দিনকে প্রধান আসামিসহ ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন নিহত সাইফুল ইসলামের বাবা তোফাজ্জল হাওলাদার। মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে আরও ১০ থেকে ১২ জনকে।