সুন্দরবন থেকে অপহৃত ১১ জেলেকে উদ্ধারের দাবি পুলিশের

মোংলা থানার পুলিশের সঙ্গে উদ্ধার হওয়া আট জেলে। বুধবার বাগেরহাটের মোংলা থানায়
ছবি: প্রথম আলো

মুক্তিপণের দাবিতে অপহরণ করে সুন্দরবনে আটকে রাখা ১১ জন জেলেকে উদ্ধার করা হয়েছে বলে দাবি করেছে বাগেরহাট জেলা পুলিশ। আজ বুধবার ভোরে সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের শরণখোলা ও চাঁদপাই রেঞ্জ এলাকা থেকে তাঁদের উদ্ধার করা হয়। তবে জেলেদের অপহরণ বা উদ্ধারের স্থান সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানায়নি পুলিশ। এ ছাড়া অপহরণকারী কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি।

পুলিশ বলছে, জেলে অপহরণের খবরে সুন্দরবনে বিশেষ অভিযান চালায় বাগেরহাট জেলা পুলিশ। আজ ভোরে শরণখোলা ও চাঁদপাই রেঞ্জ এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁদের উদ্ধার করা হয়। এর মধ্যে শরণখোলা থানার পুলিশ তিনজন এবং মোংলা থানার পুলিশ আটজনকে উদ্ধার করে।

উদ্ধার জেলেরা হলেন—হানিফ হাওলাদার (৪৮), সোহেল মল্লিক (২৮), আসাদুল শেখ (৩২), মো. আকরাম হোসেন (৪২), আনিচ শেখ (২২), মো. মিলন শেখ (২৩), মো. রফিকুল ইসলাম খান (৩৫), শুকুর আলী ব্যাপারী (৩০), মো. মনির ব্যাপারী (৩৬), মো. অলি শিকদার (৪৮) ও মো. বকতিয়ার ব্যাপারী (৩৫)। তাঁদের সবার বাড়ি বাগেরহাটের রামপাল, মোংলা, মোড়েলগঞ্জ, সদর ও খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলায়।

অভিযানের বিষয়ে দুপুরে বাগেরহাটের শরণখোলা থানায় ব্রিফ করেন পুলিশ সুপার কে এম আরিফুল হক। তিনি বলেন, ‘প্রায় ৫ থেকে ৬ দিন পর অপহৃত ১১ জেলেকে আমরা উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছি। এ বিষয়ে আমরা তৎপর আছি। সুন্দরবনকে জল ও বনদস্যুমুক্ত ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী, ওই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে আমরা আরও তৎপরতা বাড়াব।’

উদ্ধার হওয়া আরও তিন জেলে। বুধবার বাগেরহাটের শরণখোলা থানায়
ছবি: প্রথম আলো

অপহৃত সব জেলেকেই উদ্ধার করা হয়েছে দাবি করে পুলিশ সুপার বলেন, উদ্ধার জেলেরা পুলিশের হেফাজতে এবং সবাই সুস্থ আছেন। তবে জেলেদের অপহরণকারীদের বিষয়ে ‘তদন্তের স্বার্থে’ কিছু বলতে রাজি হননি তিনি।

জেলেদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বন বিভাগের অনুমতি নিয়ে ১৫ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের জিউধারা ও ধানসাগর স্টেশনের বেড়ির খাল এবং হরমল খালে জেলেরা ১০ থেকে ১১টি নৌকায় কাঁকড়া ধরছিলেন। তখন ৮ থেকে ৯ জনের একদল দস্যু জেলেদের বহর থেকে ১১ জনকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। তারা মুক্তিপণ হিসেবে জেলেদের কাছে মুঠোফোনে ১০ হাজার টাকা করে দাবি করে। জেলেদের ভাষ্য, অপহরণকারী দস্যুরা ‘নয়ন বাহিনী’র সদস্য।

সুন্দরবনে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা দস্যুতার অবসান ঘটে ২০১৮ সালে। ওই বছরের ১ নভেম্বর সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দীর্ঘদিন পর আবার দস্যুতার খবরে বনজীবী জেলেদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে।