সীতাকুণ্ডে এখনো জমে ওঠেনি কোরবানির পশুর হাট
গরু রাখার জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে তিনটি মাঠ। তার মধ্যে একটি ফাঁকাই পড়ে আছে। বাকি দুই মাঠেরও অনেক জায়গা ফাঁকা। বাজারে গরু উঠেছে কম, আবার ক্রেতাও কম। যা গরু উঠেছে সব স্থানীয়। গতকাল বুধবার সীতাকুণ্ড পৌর সদরের ফকিরহাট গরুর বাজার ঘুরে দেখা গেল এমন দৃশ্য। তবে এবারই প্রথম বাজারে বসানো হয়েছে জীবন্ত গরু পরিমাপের স্কেল।
ঈদের বাকি আর মাত্র সাত দিন। এখনো গরুর হাট জমে না ওঠার বিষয়ে বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, চট্টগ্রামের মানুষ ঈদের এক সপ্তাহ আগে গরু কেনেন না। মূলত রাখার ঝামেলা এড়াতে তাঁরা ঈদের দু-এক দিন আগে গরু কেনেন।
উপজেলার জোড়আমতল থেকে গরুর বাজারের অবস্থা দেখতে এসেছেন সিরাজুল ইসলাম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ফকিরহাটে কেমন গরু উঠেছে, দাম কেমন, খোঁজখবর নিতে এসেছেন তিনি। গরু এখনো তেমন ওঠেনি। আগামী কয়েক দিনের হাটে আরও বেশি গরু উঠবে বলে মনে করছেন তিনি।
ফকিরহাটের গরুর বাজারটি সীতাকুণ্ডের একমাত্র স্থায়ী গরুর হাট। গতকাল এখানে সাপ্তাহিক হাট বসে। তবে সপ্তাহের অন্য ছয় দিনও গরু কেনাবেচা চলে হরদম। ফকিরহাট গরুর বাজারের ইজারাদার মো. শফি বলেন, কোরবানির আগে রবি ও বুধবার তাঁরা হাট বসান। তবে স্বাভাবিক সময়ে যা গরু হাটে ওঠে, তা-ও ওঠেনি গতকাল। কোরবানির আগে যে গরু বেচাকেনা হয়, তার বেশির ভাগই কৃষক পর্যায়ের গরু। কৃষকেরা কোরবানির অনেক আগে গরু বাজারে আনা ঝামেলা মনে করেন। এদিকে চট্টগ্রামের মানুষও কোরবানির দু-এক দিন আগে গরু কেনেন। ফলে বিক্রেতারা মনে করছেন, বাজারে এখন তেমন ক্রেতা আসবেন না। তাই গরু কম উঠেছে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, কোরবানি উপলক্ষে সীতাকুণ্ডে গরু রয়েছে ৩০ হাজার ৮৬৮টি, ছাগল রয়েছে ৭ হাজার ৬৯০, মহিষ রয়েছে ৩৪১ ও ভেড়া রয়েছে ৪ হাজার ৮৮৫টি। কিন্তু এর বিপরীতে চাহিদা রয়েছে গরু ২৫ হাজার ২৫৪টি, ছাগল ৭ হাজার ৫২০, মহিষ ৯৯৪ ও ভেড়া ৩৫৮টি।
কোরবানি উপলক্ষে চাহিদার তুলনায় ১২ হাজার ৩৫৮টি পশু বেশি রয়েছে সীতাকুণ্ডে। এ বিষয়ে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা তাহমিনা আরজু বলেন, এবার বাইরের গরু-ছাগল বাজারে না এলে কৃষক ও খামারিরা তাঁদের পশুর ন্যায্যমূল্য পাবেন। বাইরের গরু-ছাগল এলে ক্রেতারা হয়তো লাভবান হবেন, তবে তাতে খামারিরা ক্ষতির মুখে পড়তে পারেন।
গতকাল বিকেলে ফকিরহাট গরুর বাজারে জীবন্ত গরুর ওজন মাপার স্কেলে তিনটি গরুর ওজন মাপতে দেখা যায়। জীবন্ত গরু পরিমাপের এই স্কেল বসিয়েছে এনজিও সংস্থা কোডেক। তারা চট্টগ্রাম ও নোয়াখালীর মোট তিনটি গরুর বাজারে এ ধরনের স্কেল বসিয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে কোডেকের প্রকল্প ব্যবস্থাপক এনায়েত হোসেন বলেন, ক্রেতারা সাধারণত অনুমান করে গরু কেনেন। এতে অনেক সময় তাঁরা ঠকে যান। গরুর সঠিক পরিমাপের জন্য স্কেলটি বসানো হয়েছে। কারও অনুমানে সন্দেহ হলে, তাঁরা ওজন পরিমাপ করে গরু কিনতে পারেন। খামারে এ ধরনের ওজন স্কেল থাকলেও বাজারে এবারই প্রথম। এই স্কেলে গরু পরিমাপে কোনো খরচ করতে হয় না ক্রেতা-বিক্রেতাকে।