কালীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির ইফতার মাহফিলে পুলিশের বাধা
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ বিএনপির ইফতার মাহফিলে বাধা দিয়েছে পুলিশ। আজ শনিবার কালীগঞ্জ শহরের নলডাঙ্গা সড়কের লাটা স্টান্ডে এই ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয়। ইফতার মাহফিল সফল করতে আয়োজকদের পক্ষ থেকে সব কার্যক্রম শেষ হলেও কালীগঞ্জ থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মাহফিল বন্ধের নির্দেশ দেয়। পাশাপাশি ইফতার মাহফিলে প্রবেশ ঠেকাতে মোড়ে মোড়ে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। অবশ্য পুলিশের নির্দেশ দেওয়ার পরও সেখানে হাজারের অধিক রোজাদার ইফতার করেন বলে জানিয়েছেন উপজেলা বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক হামিদুল ইসলাম।
এ ঘটনায় বিকেলেই বিএনপির কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক রুহুল কবির রিজভী এক ভিডিও বার্তায় তীব্র নিন্দা জানিয়ে সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, ‘পুলিশ সেখানে (ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ) অবস্থান নিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। বর্তমান ডামি সরকারের পুলিশ বাহিনী ইফতার মাহফিল ও দোয়া অনুষ্ঠানে বাধা সৃষ্টি করে। শহরের মোড়ে মোড়ে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে, যেন নেতা-কর্মীরা সেখানে উপস্থিত হতে না পারেন। ধর্মীয় কর্মসূচিতে বাধা দিয়ে বর্তমান সরকার যে স্বৈরাচার সরকার, তা আবারও প্রমাণ করেছে।’ রুহুল কবির রিজভী সেখান থেকে ইফতারের আগেই পুলিশ বাহিনীকে সরিয়ে নেওয়ার জন্য স্থানীয় প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান।
ওই ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন খুলনা বিভাগীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম, ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির সভাপতি এম এ মজিদ, খুলনা বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুণ্ডু, কেন্দ্রীয় ড্যাব নেতা ইব্রাহিম রহমান, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, উপজেলা বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক হামিদুল ইসলামসহ জেলা-উপজেলার নেতা-কর্মীরা।
নেতা-কর্মীরা জানান, প্যান্ডেল তৈরি করা হয়েছিল, যা পরে পুলিশ খুলে নিতে বাধ্য করে। দুপুরের আগেই ডেকোরেটরের হাঁড়িপাতিল ও রান্নার সরঞ্জাম আনা হয়েছিল। পুলিশ এসে ডেকোরেটরের লোকজনকে সেসব সরিয়ে ফেলতে বললে তাঁরা সেগুলো নিয়ে চলে যান। পরে বাইরে থেকে প্যাকেটের ইফতারি কিনে এনে পুলিশের উপস্থিতিতে রোজাদাররা ইফতার করেছেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু আজিফ সাংবাদিকদের জানান, বড় পরিসরে দলীয় কোনো আয়োজন করতে হলে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের অনুমতি নিতে হয়। কিন্তু তাঁরা কোনো অনুমতি নেননি। অনুমতি না নিয়েই তাঁরা উন্মুক্ত স্থানে বড় পরিসরে আয়োজন করেছেন। তবে তাঁরা সেখানে পুলিশি নিরাপত্তায় ইফতার মাহফিল সম্পন্ন করেছেন।
কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ও উপজেলা বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক হামিদুল ইসলাম বলেন, তাঁরা মাহফিল আয়োজনের এক সপ্তাহ আগেই জেলা পুলিশের বিশেষ শাখায় অনুমতির জন্য আবেদন করেছিলেন। কিন্তু পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো জবাব দেওয়া হয়নি। আজ আয়োজন প্রায় শেষ পর্যায়ে ছিল, তখন কালীগঞ্জ থানার পুলিশ এসে বন্ধ করে দেয়।