কাঁকড়া ধরতে গিয়ে মাইন বিস্ফোরণে রোহিঙ্গা তরুণ নিহত

কক্সবাজারের টেকনাফের মানচিত্র
ছবি: গুগল স্যাটেলাইট

কক্সবাজারের টেকনাফের নাফ নদের চরে কাঁকড়া ধরতে গিয়ে মাইন বিস্ফোরণে এক রোহিঙ্গা তরুণের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল রোববার বিকেল পাঁচটার দিকে নাফ নদের জালিয়ারদিয়া–সংলগ্ন (পূর্ব পাশে) লালদিয়া নামে একটি চরে এ ঘটনা ঘটে। লালদিয়া মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের পাশে।

নিহত তরুণের নাম মোহাম্মদ জোবায়ের (১৯)। তিনি টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের ২৭ নম্বর রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরের বাসিন্দা মোহাম্মদ আবদুল হামিদের ছেলে।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে টেকনাফ নৌ পুলিশের পরিদর্শক তপন কুমার বিশ্বাস প্রথম আলোকে বলেন, মাইন বিস্ফোরণে আরও দুই রোহিঙ্গা আহত হয়েছেন। তাঁরা হলেন হ্নীলা ইউনিয়নের লেদা ২৪ নম্বর রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরের বাসিন্দা কামাল হোসেনের ছেলে মোহাম্মদ শাহ আলম ওরফে জাবের এবং ২৭ নম্বর আশ্রয়শিবিরের আবদুর রহিমের ছেলে মো. আবদুস শুক্কুর। আহত দুজনকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে শাহ আলমের অবস্থা গুরুতর।

তপন কুমার বিশ্বাস আরও বলেন, গতকাল দুপুরে মো. জোবায়ের, শাহ আলম ও মো. আবদুস শুক্কুর হ্নীলা ইউনিয়নের দমদমিয়া গ্রাম–সংলগ্ন নাফ নদের লালদিয়ার চরে কাঁকড়া শিকারের জন্য যান। বিকেল চারটার দিকে হঠাৎ বিকট শব্দে মাইন বিস্ফোরণ ঘটে। এতে জোবায়েরের ডান পায়ের হাঁটুর নিচ থেকে পায়ের পাতা পর্যন্ত বিচ্ছিন্ন হয়ে উড়ে যায়। বাঁ পায়ের কিছু জায়গায় ক্ষতের সৃষ্টি হয়। অপর দুই রোহিঙ্গা শাহ আলম ও আবদুস শুক্কুরের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত লাগে। স্থানীয়রা আহত শাহ আলম ও শুক্কুরকে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে যান। পরে আত্মীয়স্বজন দুজনকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠান।

পুলিশ জানিয়েছে, জোবায়েরের লাশ তাঁর বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। পরে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে নৌ পুলিশ আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছে।

সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা আশিকুর রহমান বলেন, জোবায়েরের লাশ হাসপাতালের মর্গে আছে। গুরুতর আহত মোহাম্মদ শাহ আলমকে উন্নত চিকিৎসার জন্য গতকাল রাতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক।

সীমান্তের একাধিক সূত্র জানায়, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে টানা চার মাসের বেশি সময় ধরে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়েছে দেশটির স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। ইতিমধ্যে আরাকান আর্মি সরকারি বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) ২০টির বেশি সীমান্তচৌকি এবং একাধিক সেনা ব্যারাক দখলে নিয়েছে। লালদিয়া দ্বীপটি একসময় সরকারি বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে ছিল। দেড় মাস আগে দ্বীপটির দখল নেয় আরাকান আর্মি। দ্বীপটির চারদিকে বেশ কিছু স্থলমাইন পুঁতে রাখা হয়।