সালিসে দুই গৃহবধূকে নির্যাতন করায় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানসহ ৯ জনের কারাদণ্ড
রংপুরের বদরগঞ্জে সালিসে হাত-পা বেঁধে দুই গৃহবধূকে নির্যাতনের দায়ে ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান আয়নাল হকসহ ৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। গতকাল বুধবার বিকেলে রংপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২-এর বিচারক রোকনুজ্জামান এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের মধ্যে বদরগঞ্জ উপজেলার মধুপুর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আয়নাল হক (৪৮), তাঁর সহযোগী মহুবুল ইসলাম (৫০) ও এনামুলকে (৪৫) ১৪ বছর করে কারাদণ্ড ও প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া এনামুল (৪৭) নামের আরেকজনকে ৩ বছর এবং সাবেক ইউপি সদস্য ইলিয়াস হোসেন, সেকেন্দার আলী মণ্ডল, আবদুর রউফ মণ্ডল, মজম আলী ও বাবলু মিয়াকে এক বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা গেছে, ২০১১ সালের ২৫ জুন উপজেলার দুই গৃহবধূকে ‘চরিত্রহীন’ অপবাদ দিয়ে গ্রাম্য সালিসে তোলা হয়। পরে ওই সালিসে মধুপুর ইউপির তৎকালীন চেয়ারম্যান আয়নাল হকের নেতৃত্বে দুই গৃহবধূকে হাত-পা বেঁধে লাঠি দিয়ে মারধর করা হয়। পরে এ নির্যাতনের বিষয়ে প্রথম আলোসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে হাইকোর্ট স্বপ্রণোদিত হয়ে রুল দেন। এ ঘটনার পর ভুক্তভোগী এক গৃহবধূ ওই ইউপি চেয়ারম্যানসহ ৫৬ জনের বিরুদ্ধে বদরগঞ্জ থানায় মামলা করেন। পরবর্তীকালে আসামিদের গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হলেও কিছুদিন পর আবার তাঁরা জামিনে মুক্তি পান।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, দীর্ঘ শুনানি শেষে ৫৬ আসামির মধ্যে ৯ আসামিকে আদালত বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দিয়েছেন। মামলার অন্য আসামিদের অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত তাঁদের খালাস দিয়েছেন। রায়ে তাঁরা সন্তুষ্ট। তবে খালাসপ্রাপ্তদের বিষয়ে নথিপত্র ঘেঁটে আপিলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
বাদীপক্ষের আইনজীবী আবদুল হক প্রামাণিক বলেন, রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন তাঁরা।
আদালত থেকে বের হয়ে মামলার বাদী বলেন, রায়ে তাঁরা সন্তুষ্ট। কিন্তু দণ্ডপ্রাপ্ত ও খালাসপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা সবাই স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী। এতে তাঁরা নিরাপত্তাহীনতার আশঙ্কা করছেন।