জামায়াতের সমাবেশে হামলার ঘটনায় যুবদল নেতাসহ ২০ জনের নামে মামলা

চট্টগ্রাম জেলার মানচিত্র

চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলায় জামায়াতের সমাবেশে হামলার ঘটনায় পৌরসভা যুবদলের আহ্বায়ক কামরুল হাসানসহ (৩৭) ২০ জনের নামোল্লেখ করে মামলা হয়েছে। গতকাল শনিবার রাতে মিরসরাই থানায় মামলাটি নথিভুক্ত করা হয়।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন শাহ আলম (৪৫), বাবুল (২৭), পাভেল (২০), হাসান (২৪), শাহারিয়ার (১৯), রিয়াজ (২৭), তারেক (২৪), মাসুম (২২), মনা (২২), নিনর (৪২), জাহেদ (২৬), আলাউদ্দিন (৩০), সাদ্দাম (২২), শাকিব (২৩), নাহিদ (৩০), আরমান (২৮), রাকিব (২৪), বাবু (৩০) ও শরীফ (২২)। মামলার বাদী মিরসরাই পৌরসভা জামায়াতের আমির শিহাব উদ্দিন।

মিরসরাই পৌরসভা জামায়াতের আমির শিহাব উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, গত শুক্রবার বিকেলে মিরসরাই পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ড জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে স্থানীয় একটি স্কুল মাঠে সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছিল। এ সময় এলাকার বিএনপির নেতা শাহ আলম ও পৌর যুবদলের আহ্বায়ক কামরুল ইসলামের নেতৃত্বে ৪০ থেকে ৫০ জনের একটি দল দেশি অস্ত্র, লাঠিসোঁটা ও হকিস্টিক নিয়ে এসে জামায়াতের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা চালান। তিনি আরও বলেন, ‘হামলায় এক সাংবাদিকসহ আমাদের অনেক নেতা–কর্মী আহত হয়েছেন। এই হামলার ঘটনায় দলীয় সিদ্ধান্তে মিরসরাই থানায় একটি মামলা করেছি।’

সমাবেশে হামলার প্রতিবাদে ও এর সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে গতকাল বিকেলে মিরসরাই উপজেলা সদরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে জামায়াতে ইসলামীর মিরসরাই উপজেলা শাখা। সমাবেশে জামায়াত নেতারা বলেন, শুক্রবার সন্ধ্যায় হামলার ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দিলেও পুলিশ অপরাধীদের গ্রেপ্তার করেনি। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করা না হলে জামায়াত-শিবির কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করবে।

অভিযোগের বিষয়ে মিরসরাই পৌরসভা যুবদলের আহ্বায়ক কামরুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, স্থানীয় এস রহমান আইডিয়াল স্কুলের মাঠে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীদের নিয়ে সভা করছিলেন জামায়াতের নেতা-কর্মীরা। বিএনপি ও যুবদলের স্থানীয় নেতা-কর্মীদের সভাস্থলে গিয়ে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের দলে ভেড়ানোর বিষয়ে জিজ্ঞাসা করতে গিয়েছিলেন। সেখানে অতর্কিতে বিএনপির নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা হয়। তিনি বলেন, ‘আমাদের নেতা-কর্মীদের মারধর করে আহত করেছেন জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা। অথচ এখন উল্টো মিথ্যা হয়রানিমূলক মামলা করা হয়েছে। রাজনীতিতে আমার উত্থান ঠেকাতে স্থানীয় কিছু আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের চিহ্নিত নেতা-কর্মী জামায়াত-শিবিরকে সঙ্গে নিয়ে এই কাজ করেছেন। গতকাল বিকেলে জামায়াত নেতা শিহাব উদ্দিনের নেতৃত্বে এই চক্রের লোকজন আমার বাড়িঘরে ভাঙচুরও করেছেন।’

যুবদল নেতা কামরুল হাসানের বাড়িতে গিয়ে হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মিরসরাই পৌরসভা জামাতের আমির শিহাব উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘এটি মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগ। কামরুল হাসানের বাড়িতে হামলার সময় আমি মামলার কাজে মিরসরাই থানায় উপস্থিত ছিলাম। তার প্রতিপক্ষের লোকজন এই হামলা করে থাকতে পারে।’

মিরসরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল কাদের প্রথম আলোকে বলেন, শুক্রবার সন্ধ্যায় জামায়াতের সমাবেশে হামলার ঘটনায় ২০ জনের নামোল্লেখ করে একটি মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। যুবদল নেতার বাড়িতে হামলার বিষয় জানতে চাইলে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘কামরুল হাসানের বাড়িতে হামলার খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেব।’