পুড়ে যাওয়া গাজী টায়ার কারখানা: হতাহতের খোঁজে এখনো অনুসন্ধান শুরু হয়নি
আগুন লাগার ৬২ ঘণ্টা পরও নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে অবস্থিত গাজী টায়ার কারখানার হতাহতের খোঁজে অনুসন্ধান শুরু হয়নি। আজ বুধবার বেলা ১১টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের মিডিয়া সেল কর্মকর্তা তালহা বিন জসিম প্রথম আলোকে এ তথ্য জানান।
এই কর্মকর্তা বলেন, ছয়তলা ভবনটিতে প্রচুর রাবারসহ টায়ারের নানা কাঁচামাল মজুত ছিল। পানিতে রাবারের আগুন একবার নিভে গেলেও পরবর্তী সময়ে আবার জ্বলে উঠছে। ফলে ভবনের ভেতরের তাপমাত্রা কমাতে সময় লাগছে। তা ছাড়া দীর্ঘ সময় ধরে আগুন জ্বলতে থাকায় ভবনটি ধসে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এ বিষয়ে তাঁরা গণপূর্ত অধিদপ্তরের পরামর্শের অপেক্ষায় আছেন।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার পুড়ে যাওয়া ভবনটিতে ঢোকার বিষয়ে ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে গণপূর্ত অধিদপ্তরে পরামর্শ চাওয়া হয়। গতকাল দুপুরে গণপূর্ত অধিদপ্তরের একটি দল উচ্চ তাপের কারণে ভবনে প্রবেশ করতে পারেনি। আজ আবার তাদের ভবনটি পরিদর্শনে আসার কথা। তবে ১১টা পর্যন্ত গণপূর্ত অধিদপ্তরের কাউকে দেখা যায়নি।
নারায়ণগঞ্জ গণপূর্ত বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী ছাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আগুনের তাপে ভবনটির বিভিন্ন অংশ খসে পড়ছে। ভবনটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, বুধবারের মধ্যে তারা আগুন পুরোপুরি নেভাতে সক্ষম হবে। আগুন পুরোপুরি নিভে গেলে আমরা পর্যবেক্ষণ করব। ভবনটিতে প্রবেশ করে উদ্ধার অভিযান চালানো যায় কি না, সে ব্যাপারে তখন পরামর্শ দেব।’
এদিকে ভবনে অনুসন্ধান চালাতে না পারায় নিখোঁজ ব্যক্তিদের বিষয়ে চূড়ান্ত কোনো তথ্য দিতে পারছে না ফায়ার সার্ভিস। ফলে নিখোঁজ ব্যক্তিদের খোঁজে অপেক্ষমাণ স্বজনদের প্রতীক্ষা আরও দীর্ঘ হচ্ছে। আজ সকালেও কারখানার সামনে ও আশপাশের এলাকায় নিখোঁজ ব্যক্তিদের স্বজনদের অপেক্ষা করতে দেখা গেছে।
গত রোববার রাত নয়টার দিকে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার রূপসীতে গাজী গ্রুপের টায়ার তৈরির কারখানায় লুটপাটের পর আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে। গাজী গ্রুপের মালিক গোলাম দস্তগীর গাজী। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী ও নারায়ণগঞ্জ-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য। সম্প্রতি রাজধানীর শান্তিনগর এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। ৫ আগস্ট ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গাজী গ্রুপের রূপসী ও কর্ণগোপের দুটি কারখানায় হামলা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।