রংপুর ও লালমনিরহাটে তিস্তা নদী থেকে ৩ মরদেহ উদ্ধার, পুলিশের ধারণা ভারতীয়
রংপুরের গঙ্গাচড়া ও লালমনিরহাটের খুনিয়াগাছে তিস্তা নদীর চর থেকে অজ্ঞাতনামা তিন যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল ও আজ শুক্রবার সকালে লাশগুলো পাওয়া যায়। তবে কারও নাম–পরিচয় পাওয়া যায়নি। পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের ধারণা, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য সিকিমে প্রবল বৃষ্টিতে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যায় এই তিনজনের মরদেহ ভেসে এসেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রাত সাড়ে ৮টার দিকে তিস্তা নদীতীরবর্তী লালমনিরহাট সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের পাকারমাথা এলাকা থেকে অজ্ঞাতনামা এক যুবকের (৩২) মরদেহ উদ্ধার করা হয়। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বিকেল থেকে তিস্তায় পানি কমতে শুরু করে। এতে মাছ ধরতে যান তিস্তাপারের মানুষ। পরে মরদেহটি ধানখেতে পড়ে থাকতে দেখে পুলিশকে খবর দেন তাঁরা। পুলিশ গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। একই এলাকায় আজ সকাল ৯টার দিকে আরও একটি মরদেহ (৩৪) পাওয়া গেছে। সেটি উদ্ধারে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেছে।
লালমনিরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুমন ফারুক দুজনের মরদেহ উদ্ধারের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি আজ সকালে প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল রাতে তিস্তা নদীর তীরে এক যুবকের মরদেহ পড়ে থাকার সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে। সেই সঙ্গে আজ সকালে আরও একটি লাশের সন্ধান পাওয়া গেছে একই এলাকায়। ধারণা করা হচ্ছে, তাঁরা ভারতের নাগরিক। পানির¯স্রোতে ভেসে এসেছে। পানি কমে যাওয়ার পর স্থানীয় জনগণ মাছ ধরতে গিয়ে লাশ দেখতে পান।
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) সঙ্গে কথা বলে লাশ হস্তান্তরের চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ওসি সুমন ফারুক।
এদিকে গতকাল বিকেলে গঙ্গাচড়া উপজেলার গজঘণ্টা ইউনিয়নের চর ছালাপাক থেকে একটি মরদেহ পাওয়া যায় বলে জানিয়েছেন গঙ্গাচড়া মডেল থানার ওসি দুলাল মিয়া। এই মরদেহ রংপুর মেডিকেলের মর্গে রাখা হয়েছে।
নদীতীরবর্তী স্থানীয় ব্যক্তিরা জানান, গতকাল বিকেল থেকে তিস্তায় পানি কমতে শুরে করে। মানুষজন নদী এলাকায় ঘুরতে যান। তিস্তার চর ছালাপাক এলাকায় স্থানীয় জনগণ বস্ত্রহীন অবস্থায় একটি মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশকে খবর দেন। পরে পুলিশ গিয়ে মরদেহটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
গঙ্গাচড়া মডেল থানার ওসি দুলাল মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, এখন পর্যন্ত লাশের কোনো ওয়ারিশ পাওয়া যায়নি। হাতে সুতা বাঁধা দেখে ধারণা করা হচ্ছে, সিকিমে প্রবল বৃষ্টিতে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যায় মরদেহটি ভেসে এসেছে। বর্তমানে পানি কমতে শুরু করায় মরদেহটি চরে আটকা পড়ে যায়। লাশটি রংপুর মেডিকেলের মর্গে রাখা হয়েছে।