ছোট ভাইকে হত্যা করে লাশ গুম করেন সোহেল, আদালতে স্বীকারোক্তি

লাশ
প্রতীকী ছবি

টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার মো. সোহেল দীর্ঘদিন বিদেশে ছিলেন। বিদেশ থেকে ফেরার পর পারিবারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ছোট ভাই মো. মুকুলের সঙ্গে তাঁর দ্বন্দ্ব হয়। একপর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে সোহেল ছোট ভাইকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। গত ২৭ জানুয়ারি রাতে বন্ধু নাজমুল হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে মুকুলকে হত্যা করেন। পরে তাঁর লাশ ধানখেতে মাটিচাপা দিয়ে রাখেন।

মুকুল হত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তার মো. সোহেল (৩৪) এবং নাজমুল হোসেন (৪০) রোববার বিকেলে টাঙ্গাইল চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ জবানবন্দি দেন। পরে তাঁদের কারাগারে পাঠানো আদেশ দেওয়া হয়। দুজনকে সন্ধ্যার দিকে আদালত থেকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।

সোহেল ও মুকুল কালিহাতী উপজেলার পারখী গ্রামের মো. হানিফার ছেলে। নাজমুল হোসেনের বাড়ি দিনাজপুর জেলার চিরির বন্দর উপজেলার উত্তর দগরবাড়ি গ্রামে। গতকাল শনিবার রাতে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের সদস্যরা ঢাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করে।

রোববার সকালে পিবিআই টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সিরাজ আমীন এক সংবাদ সম্মেলন করেন। এ সময় তিনি বলেন, ২৭ জানুয়ারি থেকে মুকুল (২৪) নিখোঁজ ছিলেন। ১২ ফেব্রুয়ারি ভোরে পারখী চকপাড়ার ধানখেতে পুঁতে রাখা লাশের কিছু অংশ মানুষ দেখতে পান। খবর পেয়ে গলিত লাশটি পুলিশ উদ্ধার করে। নিখোঁজ মুকুলের স্বজনেরা তাঁর পরনের পোশাক দেখে লাশটি শনাক্ত করেন। ১৪ ফেব্রুয়ারি মুকুলের স্ত্রী লিমা আক্তার (১৯) বাদী হয়ে কালিহাতী থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করা হয়। গত বৃহস্পতিবার মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পায় টাঙ্গাইল পিবিআই।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই টাঙ্গাইলের পরিদর্শক মোস্তাফিজুর রহমান আনসারী জানান, তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার করে মুকুলের হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তাঁর বড় ভাই মো. সোহেল ও নাজমুলের সম্পৃক্ততার বিষয়টি সন্দেহ হয়। পরে শনিবার রাতে তাঁদের ঢাকা জেলার আশুলিয়া এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

পুলিশ কর্মকর্তারা জবানবন্দির বরাত দিয়ে বলেন, ২৭ জানুয়ারি সন্ধ্যায় আশুলিয়া থেকে তাঁরা কালিহাতী আসেন। সেখান থেকে কোদাল সংগ্রহ করেন। পরে মুকুলকে জরুরি কথা আছে বলে পারখী মনির উদ্দিন উচ্চবিদ্যালয় মাঠে থাকতে বলেন। রাত ১১টার দিকে মুকুলকে তাঁরা স্কুলের আধা কিলোমিটার উত্তরে বগা বিলের মধ্যে নিয়ে যান। সেখানে গলায় মাফলার পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে তাঁকে হত্যা করা হয়। হত্যার পর পাশের একটি জমিতে কোদাল দিয়ে গর্ত করে মুকুলের লাশ পুঁতে রাখা হয়।