রংপুরে শিশুসন্তানসহ নির্দোষ নারীকে গ্রেপ্তারের ঘটনা অনুসন্ধান করবে পুলিশ
রংপুরের কাউনিয়ায় শিশুসন্তানসহ নির্দোষ নারীকে থানা–হাজতে ২২ ঘণ্টা আটকে রেখে আদালতে পাঠানোর ঘটনা অনুসন্ধান করবে রংপুর জেলা পুলিশ। আজ রোববার সন্ধ্যায় জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয় থেকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মোছা. সুলতানা রাজিয়াকে এই অনুসন্ধানের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
রংপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মো. তরিকুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, প্রথম আলোর অনলাইনে প্রকাশিত প্রতিবেদনের সূত্র ধরে ওই ঘটনা অনুসন্ধান করে তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
কাউনিয়া উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের বড়ুয়াহাট গ্রামের রফিকুল ইসলামের স্ত্রী মমতাজ বেগমের নামে প্রতারণার অভিযোগে আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছিল। কিন্তু তাঁর বদলে একই ইউনিয়ন পরিষদের চান্দঘাট গ্রামের সেকেন্দার আলীর স্ত্রী শারমিন আক্তার ওরফে মমতাজকে ২২ জুন বিকেলে গ্রেপ্তার করেন কাউনিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রবিউল ইসলাম। এরপরে কোলের শিশুসন্তানসহ শারমিন আক্তারকে ২৩ জুন বেলা দুইটা পর্যন্ত প্রায় ২২ ঘণ্টা থানা-হাজতে আটক রেখে আদালতে পাঠানো হয়। ওই দিন সন্ধ্যায় শারমিন জামিনে মুক্তি পেয়ে অভিযুক্ত এসআই রবিউলের শাস্তির দাবি জানান।
এ নিয়ে গতকাল শনিবার রাতে প্রথম আলোর অনলাইনে ‘শিশুসন্তানসহ নির্দোষ নারী ২২ ঘন্টা থানা-হাজতে আটক, অভিযুক্ত এসআইয়ের শাস্তি দাবি’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। সেখানে অভিযোগের বিষয়ে এসআই রবিউল ইসলাম বলেছিলেন, ‘শারমিন আক্তার ওরফে মমতাজকে গ্রেপ্তারের সময়ে ওয়ারেন্টের কাগজ দেখানো হয়েছে। সব ঠিক আছে জানালে তখন তাঁকে থানায় এনে রেখে পরদিন আদালতে চালান দেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রে ভুল হয়েছে তাঁর, আমার নয়।’
কুর্শা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মজিদ বলেন, ঘটনাটি ছিল থানা-পুলিশের ভুল। পরে পুলিশ তা বুঝতে পেরে তাঁকে ভুক্তভোগী শারমিন আক্তারের সঙ্গে কথা বলে মিটমাট করতে বলেছিল। তিনি কথাও বলেছিলেন। কিন্তু শারমিনের পরিবারের লোকজন কিংবা পুলিশ আর এ বিষয়ে পরে তাঁর সঙ্গে কোনো কথা বলেনি।
শারমিন আক্তার আজ রাতে প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনা মীমাংসা করার জন্য অনেকে প্রস্তাব দিচ্ছেন। কিন্তু শিশুসন্তানসহ তাঁকে বিনা দোষে ২২ ঘণ্টা থানা-হাজতে আটকে রেখে আদালতে চালান দিয়েছিলেন এসআই রবিউল। তিনি তাঁর শাস্তি চান।