নকশা জনকল্যাণমূলক নয় দাবি করে যশোরে কমিউনিটি ক্লিনিকের ভবন নির্মাণে বাধা
যশোর সদর উপজেলায় কমিউনিটি ক্লিনিকের নতুন ভবন নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনে বাধা দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রামনগর ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে।
ভবনটির নকশা জনকল্যাণমূলক নয় দাবি করে ক্লিনিক পরিচালনা কমিটির সহসভাপতি ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোসলেম উদ্দীনের নেতৃত্বে স্থানীয় বাসিন্দারা কাজে বাধা দেন। বাধ্য হয়ে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন না করে ফিরে আসেন যশোরের সিভিল সার্জন বিপ্লব কান্তি বিশ্বাসসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
সিভিল সার্জন বিপ্লব কান্তি বিশ্বাস প্রথম আলোকে বলেন, সরকার সারা দেশে একযোগে ৩৭০টি কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে। সব ক্লিনিকের ভবন একই নকশায় নির্মিত হচ্ছে। কিন্তু ওই নকশা পছন্দ না হওয়ায় জমিদানকারী আওয়ামী লীগের নেতা মোসলেম উদ্দীনের নেতৃত্বে স্থানীয় বাসিন্দারা ভবনের নির্মাণকাজে বাধা দেন। তাঁরা (সিভিল সার্জন) কোনো ঝামেলা করতে চাননি বলে ফিরে এসেছেন। বিষয়টি জেলা প্রশাসককে জানানো হয়েছে।
সিভিল সার্জন কার্যালয় ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১৯৯৮ সালে সারা দেশে ১০ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপনের সময় যশোর সদর উপজেলার রামনগর ইউনিয়নে কাজিপুর কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণ করা হয়। চার বছর ধরে ক্লিনিকের ভবনটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়ে। পাঁচ শতক জমির ওপর অত্যাধুনিক ভবন নির্মাণের জন্য ৩১ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয় সরকার। ভবনটি নির্মাণে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর যশোরের তত্ত্বাবধানে ইতিমধ্যে ঠিকাদার নিয়োগ করে কার্যাদেশ দেওয়া হয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী আজ ভবনটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করতে যান সিভিল সার্জনসহ স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা। কিন্তু ভবনের নকশা বিষয়ে ক্লিনিক পরিচালনা কমিটি ও জমিদাতার সঙ্গে কোনো পরামর্শ না করায় কমিটির সহসভাপতি ও জমিদাতা মোসলেম উদ্দীনের নেতৃত্বে কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপর সিভিল সার্জনসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা কাজ বন্ধ রেখে ফিরে আসেন।
কাজে বাধা দেওয়ার বিষয়ে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোসলেম উদ্দীন বলেন, ‘আমি একা না, ক্লিনিক পরিচালনা কমিটির ছয়–সাতজন সদস্য উপস্থিত ছিলেন। আমাদের দাওয়াত দিয়ে ডেকে আনা হয়েছে। অথচ ভবনের নকশার বিষয়ে আমাদের সঙ্গে কোনো আলোচনা করা হয়নি। স্থানীয় জনমত গ্রহণ করা হয়নি। আমরা চাই, অন্তত পাঁচ হাজার মানুষের সেবা দেওয়া প্রতিষ্ঠানটি সুন্দরভাবে জনকল্যাণে নির্মিত হোক। কিন্তু নকশায় সেটা করা হয়নি। ভবনের পেছনে বেশি জমি ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। ওই জমি সামনের দিকে থাকলে রোগীরা অন্তত দাঁড়াতে পারবেন। সেটাই বলা হয়েছে।’