গাজীপুরে ৪০ বছরের পুরোনো কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা

গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ীতে পলিকন লিমিটেড নামের কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। আজ বৃহস্পতিবার কাজে গিয়ে শ্রমিকেরা সেই নোটিশ দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেনছবি: প্রথম আলো

গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ীতে প্লাস্টিক পণ্য উৎপাদনকারী একটি কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। আজ বৃহস্পতিবার সকালে কারখানার মূল ফটকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণার নোটিশ সাঁটিয়ে দেয় কর্তৃপক্ষ। এই নোটিশ দেখে কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেন।

প্লাস্টিক পণ্য উৎপাদনকারী ওই কারখানার নাম পলিকন লিমিটেড। কারখানার নির্বাহী পরিচালক ফয়সাল জহিরের সই করা নোটিশে উল্লেখ করা হয়, ডলার–সংকটের কারণে গত এক বছরের বেশি সময় ধরে কারখানাটি কাঁচামাল আমদানি করতে পারেনি। ২০২৩ সালের জুন মাস থেকে প্রচণ্ড লোডশেডিংয়ের কারণে কারখানার উৎপাদন ৮০ ভাগ কমে যায়। ব্যাংকের ঋণ, বকেয়া বেতন, গ্যাসের বিল, বিদ্যুতের বিল—কোনোটাই সঠিকভাবে আড়াই বছর ধরে পরিশোধ করতে না পারায় ৪০ বছরের প্রতিষ্ঠানটি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হলো।

আগামী তিন মাসের মধ্যে বাংলাদেশ শ্রম আইন অনুযায়ী ধাপে ধাপে সব বকেয়া বেতন পরিশোধ করা হবে বলে নোটিশে জানানো হয়।

আজ সকালে শ্রমিকেরা কাজে এসে কারখানা বন্ধ দেখতে পান। এতে শ্রমিকেরা উত্তেজিত হয়ে পড়েন। পরে তাঁরা কারখানার সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন। এ সময় তাঁরা কারখানা খুলে দেওয়ার দাবি জানান।

কারখানার শ্রমিক হামিদুল ইসলাম বলেন, ‘১৭ বছর ধরে এই কারখানায় চাকরি করি। চার মাসের বকেয়া বেতন পাব। গতকালও আমরা ডিউটি করে গেছি। আজ সকালে অফিসের গেটে এসে অনির্দিষ্টকালের জন্য কারখানা বন্ধের নোটিশ দেখতে পাই। শেষ বয়সে আমরা কোথায় চাকরি নিব? কীভাবে চলবে আমাদের সংসার?’

জাহাঙ্গীর আলম নামের আরেক শ্রমিক বলেন, ‘৩৭ বছর ধরে এই কারখানায় চাকরি করি। আমার হাতের একটি আঙুল কেটে গেছে এখানে কাজ করার সময়। হঠাৎ কারখানা বন্ধ ঘোষণা করে দিল। আমাদের কথা চিন্তা করল না মালিক। বউ-পোলাপান নিয়ে না খেয়ে মরতে হবে। আমাদের পাওনা দিয়ে বন্ধ দিয়ে দিক।’

এ বিষয়ে পলিকন লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক ফয়সাল জহিরের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি ধরেননি।

গাজীপুর শিল্প পুলিশ-২ কোনাবাড়ী জোনের পুলিশ পরিদর্শক মো. মোর্শেদ জামান বলেন, মালিকপক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা আগামী রোববার নভেম্বর মাসের বেতন দিবে। ১৩ জানুয়ারি শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী সময় তাঁদের বকেয়া পরিশোধ করা হবে।