নাটোরের বাগাতিপাড়া
চাকরি না পেয়ে বিদ্যালয়ের প্রবেশপথে বাঁশের বেড়া
চার ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকার পর পুলিশ ও প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বিদ্যালয়ে যাতায়াতের একমাত্র পথটি থেকে বেড়া সরিয়ে নেওয়া হয়।
নৈশপ্রহরীর চাকরি না পেয়ে বিদ্যালয়ের প্রবেশপথে বাঁশের বেড়া দিয়ে চলাচল বন্ধ করে দেন জমির মালিক। চার ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকার পর পুলিশ ও প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বিদ্যালয়ে যাতায়াতের একমাত্র পথটি থেকে বেড়া সরিয়ে নেওয়া হয়। গতকাল সোমবার ঘটনাটি ঘটে নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার জামনগর দ্বিমুখী উচ্চবিদ্যালয়ে।
বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিদ্যালয়টি ১৯৪৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। শুরু থেকে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা মরহুম নাজিম উদ্দিনের জমির ওপর দিয়ে যাতায়াত করতেন। রাস্তা হিসেবে দীর্ঘদিন ব্যবহার করলেও জমির মালিক বিনিময়ে কিছুই নেননি। সম্প্রতি বিদ্যালয়ে নৈশপ্রহরী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। তখন জমির মালিকের ছেলে রিয়েল আহম্মেদ ওই পদের জন্য আবেদন করেন। তবে চাকরিটা তাঁর হয়নি। ওই পদে অন্য এক প্রার্থীর চাকরি হয়েছে। এর জেরে রিয়েল ও তাঁর ভাই জুয়েল আলী গতকাল বেলা ১১টায় বিদ্যালয়ের প্রবেশপথ বাঁশের বেড়া দিয়ে বন্ধ করে দেন। অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। প্রধান শিক্ষক বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও পুলিশকে জানান।
খবর পেয়ে বাগাতিপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা দুপুরে বিদ্যালয়ে আসেন। তাঁরা জুয়েল আলীকে নিয়ে বিদ্যালয়ে কথা বলেন। সভায় মূল্য পরিশোধ করে জমি রেজিস্ট্রি করে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এই শর্তে জমির মালিক বেড়া সরিয়ে নেন।
জমির মালিক জুয়েল আলী বলেন, ‘প্রায় ৪০ বছর ধরে যাতায়াতের জন্য বিদ্যালয় ওই জমি ব্যবহার করছে। গত বছরের অক্টোবরে বিদ্যালয়ে চাকরির বিজ্ঞপ্তি হলে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে জমির বিনিময়ে নিরাপত্তাকর্মী পদে আমার ভাই রিয়েল আহম্মেদের চাকরি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে আরেকজনকে নিয়োগ দিয়েছে। এরপর জমির মূল্য বাবদ তিন লাখ টাকা দেওয়ার কথা হয়। কিন্তু বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তা–ও দেয়নি। তাই তিনি জমির সীমানায় বাঁশ দিয়ে বেড়া দিয়েছিলেন। পরে মীমাংসার শর্তে বেড়া সরিয়ে দিয়েছেন।’
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুর রাজ্জাক বলেন, বিদ্যালয়ের প্রবেশপথের ওই জমি ব্যক্তি মালিকানাধীন। বেড়া দেওয়ার খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে বেলা দুইটার দিকে স্কুলের অফিসে উভয় পক্ষকে নিয়ে একটি বৈঠকে বসা হয়েছিল। সেখানে আইনগতভাবে জমি গ্রহণের জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে।
বাগাতিপাড়া মডেল থানার ওসি শফিউল আযম খান বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয় এবং বাঁশের বেড়া উচ্ছেদ করা হয়।