পিরোজপুরে কয়লাবোঝাই জাহাজ থেকে হাত-পা বাঁধা এক শ্রমিকসহ ছয়জনকে উদ্ধার
পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় উপজেলার ছোট মাছুয়া বলেশ্বর নদের চরে আটকে যাওয়া এমবি শাকিল পরিবহন (এম ২৫৯১২) নামের একটি কয়লাবাহী জাহাজ থেকে অচেতন অবস্থায় ছয় শ্রমিককে উদ্ধার করা হয়েছে। শুক্রবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে স্থানীয় লোকজনকে নিয়ে পুলিশ শ্রমিকদের উদ্ধার করে মঠবাড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
শ্রমিকদের মধ্যে নাছির হোসেন (৩৫) নামের একজনকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। অন্যরা হলেন জাহাজের মাস্টার আবুল হাশেম (৪৯), ইঞ্জিন সুকানি বিপ্লব (৩৫), বাবুর্চি নিদু মিয়া (৬০), স্কট মো. শান্ত (১৮) ও শাওন (১৭)।
পিরোজপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মোহাম্মদ মুকিত হাসান খান বলেন, আহত শ্রমিকদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে এবং জাহাজটি নিরাপদে রাখা হয়েছে। মঠবাড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা সাকিল সরোয়ার জানান, বিকেল পাঁচটার পরে আহত অবস্থায় ছয়জনকে আনা হয়। তাঁদের চেতনানাশক কিছু খাওয়ানো হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সবার শরীরেই আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাঁরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছেন।
জাহাজের মাস্টার আবুল হাশেম বলেন, ‘গত বৃহস্পতিবার মোংলা থেকে জাহাজে কয়লা বোঝাই করে ঢাকার গাবতলীর উদ্দেশে রওনা দিই। মোরেলগঞ্জ থানাধীন সোনাখালী নামক স্থানে নদীতে জাহাজ নোঙর করে ইফতার ও তারাবিহ নামাজ পড়ে বিশ্রাম করি। হয়তো ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। এরপর এখানে কীভাবে এলাম, তা আমরা বলতে পারি না।’ একই রকম তথ্য দিয়ে জাহাজের স্কট মো. শান্ত বলেন, ‘ইফতার করার সময় সোনাখালীর সেখান থেকে দুজন স্কট আমাদের জাহাজে এসেছিল। তারপর কী হয়েছে আমি বলতে পারি না। শুক্রবার দুপুরে আমাদের জাহাজ এখানে চরের সঙ্গে আটকে থাকা অবস্থায় এবং জাহাজের লোকজনের হাত-পা বাঁধা দেখতে পাই। জাহাজের ইঞ্জিন বন্ধ করা হয়নি। আমাদের সঙ্গে থাকা নগদ টাকা ও মোবাইল নিয়ে গেছে।’
স্থানীয় সেলিম ব্রিকসের ব্যবস্থাপক সরোয়ার হোসেন জানান, সাহ্রি খাওয়ার পর নদীর চরে জাহাজটি আটকে থাকতে দেখেন। ইঞ্জিন চলছিল। তিনি বলেন, ‘আমরা বারবার চিৎকার করে সমস্যা জানার চেষ্টা করছিলাম, কিন্তু কোনো উত্তর না পেয়ে দুপুরের দিকে ট্রলারযোগে জাহাজের কাছে গিয়ে লোকজনকে হাত-পা বাঁধা ও অচেতন অবস্থায় দেখতে পেয়ে আমার মালিককে অবহিত করি।’
জাহাজের মালিক মাহাবুবুর রহমান বলেন, ‘গুইশাখালীতে টোল দেওয়ার পর আমার সঙ্গে জাহাজের কারও কোনো যোগাযোগ হয়নি। সারা রাত আমি জাহাজের সবার নম্বর বন্ধ পাই। আমার জাহাজের পাইলট মোংলা থেকে ওঠার কথা ছিল আর নামবে কাউখালী। কিন্তু সে গুইশাখালীতে নেমে গেছে। কিন্তু কীভাবে এ ঘটনা ঘটল, তা আমি বলতে পারব না। এ ঘটনার সঙ্গে পাইলটের কোনো যোগাযোগ থাকতে পারে বলে আমি ধারণা করছি।’