কোম্পানীগঞ্জে সেবাপ্রত্যাশী নারীর সঙ্গে দুর্ব্যবহার, এসআইকে প্রত্যাহার
থানায় সেবা নিতে আসা এক নারীকে গালিগালাজ ও মুঠোফোনে দুর্ব্যবহার করার অভিযোগে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. রতন মিয়াকে জেলা পুলিশ লাইনসে প্রত্যাহার (ক্লোজড) করা হয়েছে। আজ সোমবার সকালে জেলা পুলিশ সুপার মো. শহীদুল ইসলামের নির্দেশে তাঁকে থানা থেকে প্রত্যাহার করা হয়। এর আগে গতকাল রোববার সন্ধ্যায় নারীর সঙ্গে এসআই রতনের দুর্ব্যবহারের বিষয়টি প্রকাশ পায়।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাদেকুর রহমান বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আজ সকালে অভিযুক্ত এসআইকে থানা থেকে প্রত্যাহারের বিষয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তিনি এখন আর কোম্পানীগঞ্জ থানায় নেই।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ১৫-২০ দিন আগে কোম্পানীগঞ্জ থানায় ওই উপজেলার এক নারী (৫৭) একটি লিখিত অভিযোগ করেন। লিখিত অভিযোগে ওই নারী দাবি করেন, একই উপজেলার সিরাজপুর ইউনিয়নের সাইফুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি তাঁর ছেলেকে সৌদি আরবে চাকরি দেওয়ার কথা বলে চার লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। পরবর্তীকে আরও টাকা দিতে তাঁকে বাধ্য করে। এ ছাড়া কাগজপত্রের ত্রুটি থাকায় ওই নারীর ছেলে সৌদি আরবে কাজও পাচ্ছেন না। এই প্রতারণার প্রতিকার চেয়ে ওই নারী কোম্পানীগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন। সেখানে সাইফুল ইসলামসহ চারজনকে আসামি করা হয়।
ওই নারী প্রথম আলোকে বলেন, থানার এসআই রতন মিয়া অভিযোগে তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছিলেন। রতন মিয়া বিষয়টি মীমাংসার জন্য থানায় না বসে বসুরহাটের একটি রেস্তোরাঁয় বসার জন্য তাঁকে বিভিন্নভাবে চাপ দেন। তবে তিনি এই প্রস্তাবে রাজি না হওয়া গত শনিবার সন্ধ্যায় রতন মিয়া তাঁকে মুঠোফোনে গালমন্দ করেন। পরে ওই দিনই থানা ফটকের সামনে রতন মিয়া তাঁকে অশ্লীল ভাষায় গালি দেন।
ওই নারী বলেন, গালমন্দ করার সময় ছেলেও তাঁর সঙ্গে ছিলেন। মুঠোফোনে এসআই রতন তাঁর ছেলেকেও অশ্লীল ভাষায় গালমন্দ করেছেন। তাঁর ছেলে মুঠোফোনে ওই কথোপকথন রেকর্ড করে রাখেন। তিনি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও অভিযুক্ত এসআইয়ের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে রতন মিয়ার মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছে। তবে তিনি কল রিসিভ করেননি।
ওসি মো. সাদেকুর রহমান বলেন, ভুক্তভোগী নারী থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ করেননি। এ ছাড়া এসআই রতনের আচার-আচরণ ভালো না হওয়ার কারণে তিনি এমনিতেই রতনকে কোনো তদন্তের দায়িত্ব দিতেন না। এ কারণে রতন হয়তো নারীর অভিযোগ নিয়ে থানায় বসতে চাননি।
পুলিশ সুপার শহীদুল ইসলাম বলেন, এসআই রতন মিয়ার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের বিষয়ে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে এক সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। পাঁচ দিনের মধ্যে তদন্ত কমিটিকে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।