সুরমা নদী খনন ঘিরে শুভংকরের ফাঁকি চলছে, পরিবেশকর্মীদের অভিযোগ
সুরমা নদী খনন নিয়ে যা হচ্ছে, তা রাষ্ট্রের অর্থের অপচয় বলে মনে করছেন পরিবেশকর্মীরা। তাঁদের অভিযোগ, সুরমা নদী খনন ঘিরে শুভংকরের ফাঁকি চলছে। ধীরগতিতে চলছে খননকাজ। প্রকল্পের আওতাধীন ১৮ কিলোমিটারের মধ্যে নদীর ৮ কিলোমিটার অংশও খনন হয়নি।
আজ শনিবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলার দক্ষিণ কুশিঘাট এলাকায় সুরমা নদীর খননকাজ পরিদর্শন শেষে পরিবেশকর্মীরা এমন অভিযোগ করেন। আন্তর্জাতিক নদী কৃত্য দিবস উপলক্ষে সুরমা রিভার ওয়াটারকিপার ও ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা) নামের দুটি পরিবেশবাদী নাগরিক সংগঠন এ খননকাজ পরিদর্শনের উদ্যোগ নেয়।
খননকাজ পরিদর্শন দলের নেতৃত্ব দেন সিলেটের পরিবেশ ও ঐতিহ্য সংরক্ষণ ট্রাস্টের সভাপতি মোস্তফা শাহজামান চৌধুরী। দলটিতে ছিলেন ধরার কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আবদুল করিম চৌধুরী কিম, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুদীপ্ত অর্জুন ও গোলাম সোবহান চৌধুরী, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী ওয়াক্কাস, নাগরিক সংগঠক রেজাউল কিবরিয়া, সমাজকর্মী রোমেনা বেগম, দক্ষিণ সুরমার ভাড়েরা বিল রক্ষা সংগ্রাম কমিটির নেতা শামীম কবীর, পরিবেশকর্মী নিরঞ্জন সরকার প্রমুখ।
পরিদর্শন শেষে খননকাজ নিয়ে পরিবেশ আন্দোলনকর্মীরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান। প্রতিনিধিদলের প্রধান মোস্তফা শাহজামান চৌধুরী বলেন, সিলেটের মানুষ আশা করেছিল সুরমা নদী খননের মাধ্যমে নব্যতা ফেরানো হবে। কিন্তু নদী খননের কাজ লক্ষ্যমাত্রা থেকে বহুদূরে। নদী খনন নিয়ে রাজনৈতিক নেতৃত্বের নজরদারি না থাকায় প্রকল্পের ৫০ কোটি টাকা জলেই যাবে বলে মনে হচ্ছে।
ধরার কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আবদুল করিম চৌধুরী বলেন, গত বছরের ২১ জানুয়ারি সুরমা নদীর খননকাজের উদ্বোধন করেছিলেন তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। সে সময় তিনি আসছে বর্ষার আগে খননকাজ শেষ হওয়ার আশ্বাস দেন। বর্ষা শেষে হয়ে আরেক বর্ষা আসছে। অথচ কাজের অগ্রগতি খুব কমই হয়েছে। ধীরগতিতে এ খননকাজ চলছে। তাই খননকাজ যথাযথভাবে শেষ করার দাবিতে পরিবেশ আন্দোলনকর্মীরা নতুন কর্মসূচি দেবেন বলেও তিনি এ সময় জানান।
পরিদর্শন দলের সদস্যরা জানিয়েছেন, সুরমা নদীর খননকাজ যথাযথভাবে শেষ না হলে আবারও সিলেট নগরবাসী বন্যায় নাকাল হবেন। তাই নদীর খননকাজ আদায়ে সর্বমহলের সোচ্চার হওয়া প্রয়োজন। এ ছাড়া সুরমা নদীর পানিপ্রবাহ স্বাভাবিক রাখতে হলে পুরো নদী খনন করতে হবে। সুরমার উৎসমুখের ৩২ কিলোমিটার অংশের শতাধিক চর খনন করে ভারতের বরাকের সঙ্গে সুরমা নদীর সংযোগ প্রতিষ্ঠা করতে হবে।