ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণার পর দ্বিতীয় দিনের মতো উত্তপ্ত ছিল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। নতুন কমিটিকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা ‘পদবঞ্চিত’ নেতা-কর্মীরা আজ সোমবার দুপুরের দিকে কয়েকটি মোটরসাইকেলে করে ক্যাম্পাসে আসেন। এরপর তাঁরা অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। দিনব্যাপী চলে মহড়া। সন্ধ্যার দিকে ক্যাম্পাসে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনাও ঘটে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মাদার বখ্শ হল ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের সামনে আজ সন্ধ্যায় তিনটি করে ককটেল বিস্ফোরণের খবর পাওয়া যায়। এর আগে গতকাল রোববার সন্ধ্যায়ও ক্যাম্পাসে ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটে।
ক্যাম্পাসের বর্তমান পরিস্থিতির বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আসাবুল হক বলেন, ‘ক্যাম্পাসে শোডাউন (মহড়া) হয়েছে। ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা শুনিনি। এ বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।’
আর পুলিশের মতিহার জোনের এডিসি একরামুল হক বলেন, ক্যাম্পাসে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।
মোস্তাফিজুর রহমানকে সভাপতি ও আসাদুল্লা-হিল গালিবকে সাধারণ সম্পাদক করে গত শনিবার রাতে এক বিজ্ঞপ্তিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নতুন কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় কমিটি। এরপর কমিটিতে পদবঞ্চিতরা আন্দোলন শুরু করেন।
কাঙ্ক্ষিত পদ না পাওয়ায় নতুন কমিটির সহসভাপতি শাহিনুল ইসলাম আজ বলেন, দিনভর বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। হলগুলোয় গিয়ে ‘বিতর্কিত’ কমিটির বিষয়ে শিক্ষার্থীদের অবগত করা হয়েছে। কমিটি বাতিল না করা পর্যন্ত কর্মসূচি চলবে। সভাপতি–সাধারণ সম্পাদককে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না।
নতুন কমিটির আরেক সহসভাপতি তাওহীদুল ইসলাম বলেন, কমিটির বিষয়ে বিভিন্ন অভিযোগ কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে পাঠানো হয়েছে। নতুন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক রাজশাহীতে যেদিন আসবেন, সেদিন তাঁদের প্রতিহত করা হবে।
তবে মাদার বখ্শ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের সামনে কে বা কারা ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে, সে সম্পর্কে কিছু জানেন না বলে দুই সহসভাপতি জানান।
নতুন কমিটি ঘোষণার দুই দিন পরও সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল গালিব ক্যাম্পাসে আসেননি। এ বিষয়ে মোস্তাফিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা আপাতত ঢাকায় অবস্থান করছেন। ক্যাম্পাসে কবে আসবেন, সে বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত নেননি।
এদিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি নিয়ে সন্ধ্যায় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালি আসিফ প্রথম আলোকে বলেন, সংগঠনের প্রতি আবেগ ও ভালোবাসা থাকলে ছাত্রলীগের ক্ষতি হয়, এমন কিছু কেউ করবেন না। শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নষ্ট হয়, এমন কোনো কাজে ছাত্রলীগের যুক্ত হওয়ার কথাও নয়। এরপরও কারও যদি কোনো অভিযোগ থাকে, সেটি নিয়ে আলোচনা হতে পারে।
শেখ ওয়ালি আসিফ আরও বলেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু এটা নিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিশৃঙ্খলা করার কোনো সুযোগ নেই।