শ্রমিক নিহতের প্রতিবাদে জাহাঙ্গীরনগরের শিক্ষার্থীদের ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ

আশুলিয়ায় গুলিতে এক শ্রমিক নিহতের প্রতিবাদে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। আজ মঙ্গলবার দুপুরেছবি: প্রথম আলো

ঢাকার আশুলিয়ায় গুলিতে এক শ্রমিক নিহতের প্রতিবাদে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। আজ মঙ্গলবার বেলা ১টা ১৪ মিনিটের দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকসংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ শুরু করেন তাঁরা, যা বেলা ২টায় শেষ হয়। এ সময় সড়কের উভয় লেনে যানজটের সৃষ্টি হয়। তবে অ্যাম্বুলেন্সসহ জরুরি পরিষেবার যান চলাচল স্বাভাবিক রাখা হয়েছিল।

গতকাল সোমবার আশুলিয়ায় তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় গুলিতে কাউসার নামের এক শ্রমিক নিহত এবং অন্তত পাঁচজন আহত হন।

আরও পড়ুন

আজ অবরোধ চলাকালে নানা স্লোগান দেন বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরা। অবরোধে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সংগঠক সোহাগী সামিয়া বলেন, অবিলম্বে এই হত্যাকাণ্ডের বিচার করতে হবে। যে হত্যাকাণ্ড হয়েছে, সেটা খুবই অপ্রত্যাশিত; কারণ স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকে হটানো হয়েছে বেশি দিন হয়নি। কিছুদিন সময়ের ব্যবধানে রাষ্ট্র যদি একই রকমভাবে স্বৈরাচারী কায়দায় জনগণকে দমানোর চেষ্টা করে, জনগণের অধিকার বঞ্চিত করার চেষ্টা করে, তাহলে সেই রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।

গণ-অভ্যুত্থানে ছাত্রদের যতখানি, ঠিক ততখানি অংশগ্রহণ শ্রমিকদের ছিল উল্লেখ করে ছাত্র ইউনিয়ন বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের একাংশের সাধারণ সম্পাদক ঋদ্ধ অনিন্দ্য গাঙ্গুলী বলেন, ‘আমরা যে অভ্যুত্থানটি ঘটিয়েছি, সেটা ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান। কখনো কখনো শ্রমিকেরা অগ্রভাগে ছিলেন এবং জীবন দিয়েছেন। গত ৫ আগস্ট লং মার্চে অসংখ্য পোশাকশ্রমিকের অংশগ্রহণ ছিল। কাজেই সেই গণ-অভ্যুত্থানপরবর্তী বাংলাদেশে নতুন সরকারের হাতে, রাষ্ট্রীয় বাহিনীর হাতে আন্দোলনরত পোশাকশ্রমিকেরা খুন হচ্ছেন, সেটি আমাদের জন্য অত্যন্ত ক্ষোভের।’

সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের (মার্ক্সবাদী) বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সংগঠক সজীব আহমেদ বলেন, ‘আমরা যে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ি, সেই বিশ্ববিদ্যালয় শ্রমিকের টাকায় চলে, আমার শিক্ষকের বেতন হয় শ্রমিকের টাকায়, আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের আসবাবপত্র ক্রয় করা হয় শ্রমিকের টাকায়। যার কারণে একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে আমি শ্রমিকের কাছে দায়বদ্ধ। সেই দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে আমরা শ্রমিকের পাশে দাঁড়িয়েছি। এ হত্যাকাণ্ডের বিচার করতে হবে। এই দায় অন্তর্বর্তী উপদেষ্টা সরকারকে নিতে হবে।’