বিএনপির তিন সংগঠনের লংমার্চ আখাউড়া স্থলবন্দরে পৌঁছেছে

লংমার্চকে স্বাগত জানাতে আগে থেকেই স্থলবন্দর এলাকায় অবস্থান নেন যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের নেতা–কর্মীরা। আজ বুধবার দুপুরে আখাউড়া স্থলবন্দরের পাশের সড়কেছবি: প্রথম আলো

ঢাকা যাত্রা শুরু করা যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের লংমার্চ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দরে পৌঁছেছে। আজ বুধবার বিকেল চারটার দিকে লংমার্চের বহর স্থলবন্দর মাঠে আসে। সেখানে সমাবেশের মধ্য দিয়ে লংমার্চ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।

ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলা, জাতীয় পতাকার অবমাননাসহ বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে এ কর্মসূচি করছে বিএনপির তিন সংগঠন। কর্মসূচি ঘিরে স্থলবন্দর এলাকায় নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করেছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। আখাউড়া স্থলবন্দরে গ্রাম পুলিশ, থানা–পুলিশ ও বিজিবি সদস্যদের মোতায়েন করে তিন স্তরের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

আরও পড়ুন

এদিকে সংগঠন তিনটির ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা, ফেনী, নোয়াখালী, সিলেটসহ বিভিন্ন জেলার নেতা-কর্মীরা মাথায় জাতীয় পতাকা বেঁধে এবং হাতে ফেস্টুন, জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা নিয়ে কর্মসূচিতে যোগ দিতে আখাউড়া স্থলবন্দরে পৌঁছেছেন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, স্থলবন্দরের মাঠের পাশের রাস্তায় গ্রাম পুলিশ ও শুল্ক স্টেশনের প্রধান ফটক থেকে ১০০-১৫০ গজ দূরত্বে ব্যারিকেড দিয়ে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছে জেলা পুলিশ। দুই দেশের যাত্রীদের হেঁটে আখাউড়া আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন পুলিশ চেকপোস্টে যেতে হচ্ছে। ইমিগ্রেশনের সামনে বিজিবির সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে। বিকেল চারটা পর্যন্ত ২৮ বাংলাদেশি ও ২৪ ভারতীয় যাত্রী আখাউড়া ইমিগ্রেশন দিয়ে ভারতে গেছেন। অন্য দিনের তুলনায় যাত্রীদের পারাপার তুলনামূলক কম।

লংমার্চ কর্মসূচির অংশ হিসেবে কিশোরগঞ্জের ভৈরবের পথসভায় বক্তব্য দেন নেতারা। আজ বুধবার দুপুরে
ছবি: প্রথম আলো

স্থলবন্দর মাঠ থেকে আধা কিলোমিটার আগেই জেলা যুবদলের সভাপতি শামীম মোল্লার নেতৃত্বে নেতা–কর্মীসহ সব মানুষের যানবাহন থামিয়ে দেওয়া হচ্ছে। সেখানে একটি ফাঁকা জায়গায় নেতা–কর্মীদের পাঁচ হাজার যানবাহন রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

বিজিবির ৬০ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল এ এম জাবের বিন জব্বার প্রথম আলোকে বলেন, আখাউড়া স্থলবন্দরে পর্যাপ্ত পরিমাণে বিজিবির সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে। এ ছাড়া রিজার্ভেও রাখা হয়েছে বিজিবি সদস্যদের একটি দল।

আরও পড়ুন

এর আগে আজ সকাল আটটায় নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে লংমার্চ শুরু হওয়ার কথা ছিল, শুরু হয় সকাল সাড়ে ৯টার দিকে। এ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সকাল সাতটার পর থেকে বিএনপির তিন সংগঠনের নেতা-কর্মীরা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে নয়াপল্টনে জড়ো হতে থাকেন।

ভারতের আগরতলা অভিমুখে লংমার্চ শুরুর আগে নয়াপল্টনে বিএনপির তিন সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মী জড়ো হন
ছবি: সাজিদ হোসেন

সেখানে লংমার্চ শুরর আগে সমাবেশে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘আমরা রক্ত দিয়ে স্বাধীনতা কিনেছি, এই স্বাধীনতা বিক্রি করে দেব? আমরা পিন্ডির কাছ থেকে স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছি দিল্লির কাছে আত্মসমর্পণ করার জন্য নয়?’ রুহুল কবির রিজভী বলেন, ভুটান, নেপাল, বাংলাদেশ, মালদ্বীপ, শ্রীলঙ্কার লোকেরা নিজের কথায় চলুক, এটা ভারত চায় না। দিল্লির কথায় চলতে হবে কেন? বাংলাদেশের মানুষের রক্তের তেজ, আত্মশক্তি, বীরত্ব দিল্লির শাসকেরা বুঝতে পারেননি।

লংমার্চটি দুপুরে কিশোরগঞ্জের ভৈরবে পৌঁছায়। কর্মসূচির অংশ হিসেবে বেলা দেড়টার দিকে ভৈরবে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বাসস্ট্যান্ডে পথসভার আয়োজন করা হয়। সেখানে যুবদলের সভাপতি আবদুল মোনায়েম বলেন, ‘দেশ ও জনগণের স্বার্থে বিএনপি ঐক্যবদ্ধ। ঐক্যবদ্ধ থেকে দেশের স্বার্থ রক্ষা করা হবে। বিশেষ করে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠন আপসহীন থেকে কাজ করে যাবে। ঐক্যবদ্ধ থেকে আমরা ভারতীয় আগ্রাসন রুখে দেব।’