অন্তর্বর্তী সরকারকে আমরা সময় দিতে চাই: জামায়াতের নায়েবে আমির

রাজশাহীতে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের এক সভায় বক্তব্য দিচ্ছেন জামায়াতের নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান। শুক্রবার নগরের একটি রেস্তোরাঁয়ছবি: প্রথম আলো

জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেছেন, ‘বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে আমরা সময় দিতে চাই। এ ক্ষেত্রে যৌক্তিক সময় দেওয়া উচিত। খুব বেশিও দেওয়া উচিত না, কম দিয়ে তাড়াহুড়াও করা উচিত না।’

বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের রাজশাহী মহানগর আয়োজিত এক শ্রমিক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। শুক্রবার নগরের একটি রেস্তোরাঁয় এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, ‘বিভিন্ন জায়গায় দলীয় প্রশাসনে বসে ছিল, পুলিশে হোক, বিজিবিতে হোক, আর্মিতে হোক, বিচারালয়, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিল্পপ্রতিষ্ঠানে যেখানে যাকে বসিয়েছিল, এই দলীয় লোকগুলোকে সরিয়ে সেখানে নিরপেক্ষ লোককে বসাতে হবে। এই কাজ করতে যতখানি সময় লাগে, সে সময় আমাদের দিতে হবে।’

অতীতের কথা উল্লেখ করে রাজশাহীর সাবেক এই সংসদ সদস্য বলেন, ‘অতীতে আমরা কোনো স্বৈরশাসককে বরদাশত করিনি। ভবিষ্যতেও করব না। জনগণের কল্যাণে যারা কাজ করবে, আমরা তাদের সঙ্গে আছি। অতীতে কিছু লোক ক্ষমতায় গিয়ে, ক্ষমতার স্বাদ যখন পেয়ে যায়, ক্ষমতা আর ছাড়তে চায় না। তখন নিজেরা ক্ষমতায় থেকেই একটা আইন জারি করে দেয়। সরকারের ওই পর্যায়ে থেকে দল তৈরি করে তারা নিজেরাই ক্ষমতায় থাকার একটা পাকাপোক্ত ব্যবস্থা করেছিল। এ রকম যাতে না করে। অন্তর্বর্তী সরকারকে একটা নির্দিষ্ট সময়ে, যৌক্তিক সময়ের মধ্যে কাজগুলো সম্পন্ন করে একটা নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। এই নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। এটিই এখন সময়ের দাবি।’

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের সমালোচনা করে অধ্যাপক মুজিবুর বলেন, ‘তারা পুলিশকে দলীয়করণ করেছিল। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় দলীয় পুলিশকে নির্দেশ দিল, “দেখামাত্র গুলি কর”। তারা অসংখ্য মানুষকে হত্যা করেছে। পুলিশ শ্রমিকদের টাকায় চলে, জনগণের টাকায় চলে। জনগণের টাকায় চলে পুলিশ অজস্র মানুষকে হত্যা করেছে। এর চাইতে জঘন্য কাজ আর হতে পারে না। এই পুলিশের বেশির ভাগই দলীয় সরকারের পক্ষ থেকে নিয়োগ করা পুলিশ।’

মুজিবুর রহমান আরও বলেন, ‘এই জন্য, তারা এই অপরাধ করার কারণে কিছু লোক পুলিশে আসেইনি। থানাতেও আসে নাই, ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করে নাই। এই দায়িত্ব পালন করেছে আমাদের ছাত্র ভাইয়েরা। তারা রোদে কষ্ট করে যেভাবে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করেছে, যেভাবেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করেছে, ইতিহাসে তাদের নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।’

সমাবেশে প্রধান আলোচক ছিলেন জামায়াতের রাজশাহী মহানগরের আমির কেরামত আলী। বিশেষ অতিথি ছিলেন শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি মজিবুর রহমান ভূঁইয়া, মহানগরের সভাপতি অধ্যাপক আব্দুস সামাদ, সহসভাপতি আফাজ উদ্দিন সরকার, পবার হড়গ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ।