দ্রব্যমূল্যের চাপে মানুষ খারাপ অবস্থায় আছে: জি এম কাদের
নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে সরকার ব্যর্থ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদের। তিনি বলেছেন, দ্রব্যমূল্য সরকার যা-ই বেঁধে দিয়ে থাকুক, বাজারে এর চেয়ে মূল্য বেশি। কৃষকেরা অনেক সময় কম দামে দিচ্ছেন, কিন্তু শহরে তা অনেক বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। সেটা করা হচ্ছে অযৌক্তিকভাবে। তা নিয়ন্ত্রণে সরকারের কোনো রকম পদক্ষেপ জনগণের চোখে পড়ছে না। দ্রব্যমূল্যের চাপে মানুষ অত্যন্ত খারাপ অবস্থায় আছে। এটা একটা দুর্বিষহ অবস্থা।
আজ শুক্রবার বেলা পৌনে একটায় রংপুর নগরীর দর্শনায় পল্লী নিবাসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে জি এম কাদের এসব কথা বলেন। এর আগে দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের কবর জিয়ারত করেন তিনি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী জি এম কাদের বলেন, ‘এখন বিশ্ববাজারের চেয়ে আমাদের দেশে পণ্যের দাম অনেক অনেক বেশি। এমনকি শ্রীলঙ্কা যেটাকে আমরা ব্যর্থ রাষ্ট্র বলেছিলাম, যারা ঘোষণা দিয়ে দেউলিয়া হয়ে গেছে, আর পাকিস্তান যেটাও ব্যর্থ রাষ্ট্রের মতো ঘোষণা হয়ে গেছে, তারাও আমাদের চেয়ে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে অনেক অনেক ভালো অবস্থানে আছে। তাদের দেশে নিত্যপণের মূল্য আমাদের চেয়ে অনেক কম। বিশ্ববাজারের তুলনায় এখন আমাদের দেশের পণ্য মূল্য অনেক অনেক বেশি।’
সরকারিভাবে তিন পণ্যের দাম বেঁধে দেওয়া প্রসঙ্গে জাপা চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমি মনে করি এটা কখনোই সফল হওয়া সম্ভব নয়। সঠিকভাবে না বুঝেই কিছু একটা দাম নির্ধারণ করেছেন। এটা দেখার যাঁদের দায়িত্ব, তাঁরা সঠিকভাবে করছেন বলে আমার মনে হচ্ছে না। সে কারণে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে না। যে দাম বেঁধে দেওয়া হচ্ছে, তা কোনোটাই মানা হচ্ছে না। বাজারে এসবের কোনো প্রতিফলন নেই।’
আসন্ন জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে সংসদের বিরোধী দলীয় উপনেতা জি এম কাদের বলেন, ‘আমরা এখন পর্যন্ত চিন্তা করছি ৩০০ আসনে করব। ভবিষ্যতে কী করব, ভবিষ্যতের অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা হবে। যেহেতু এখনো রাজনৈতিক পরিস্থিতি অনেক অস্থিতিশীল, অনিশ্চিত, সবকিছু জেনে বিবেচনায় নিতে হবে। সরকার একধরনের নির্বাচন করতে চাচ্ছে, সরকারের বিপক্ষ আরেক ধরনের নির্বাচন করতে চাইছে। কোন পদ্ধতিতে আসলে নির্বাচন হবে, সেটাই আমরা জানি না। নির্বাচন সঠিক পথে, সঠিক সময়ে হবে কি না, এটা নিয়ে জনগণের মধ্যে অনেক সন্দেহ আছে, আশঙ্কা আছে। সব মিলিয়ে আমরা এখনই কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারছি না সঠিকভাবে। শেষ পর্যন্ত কে লড়বেন আর কে থাকবেন, সেটাও অনিশ্চিত। রংপুর-৩ আসনে প্রার্থী চূড়ান্ত নিয়েও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জাপা চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ও জাতীয় সাংস্কৃতিক পার্টির সভাপতি সংসদ সদস্য শেরিফা কাদের, জাপার অতিরিক্ত মহাসচিব সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী, ঢাকা দক্ষিণের সভাপতি সংসদ সদস্য সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, জাপার ভাইস চেয়ারম্যান সংসদ সদস্য আদেলুর রহমান, রংপুর মহানগরের সাধারণ সম্পাদক ও জাপার ভাইস চেয়ারম্যান এস এম ইয়াসির, জেলার সদস্যসচিব ও কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুর রাজ্জাক, কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাফিউল ইসলাম, সাংস্কৃতিক সম্পাদক আজমল হোসেন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য লোকমান হোসেন, জাতীয় ছাত্র সমাজের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল মামুন প্রমুখ।
এর আগে সকালে ঢাকা থেকে বিমানে সৈয়দপুরে আসেন জাপা চেয়ারম্যান জি এম কাদের। সেখানে তাঁকে জাতীয় পার্টির রংপুর বিভাগের নেতা-কর্মীরা ফুলেল শুভেচ্ছায় অভ্যর্থনা জানান। তিনি দুই দিনের সফরে রংপুর ও লালমনিরহাটে দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নেবেন।