রংপুরের গঙ্গাচড়ায় বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে গ্রেপ্তার আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে মিছিলে বাধা দেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতা–কর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় পুলিশের করা মামলায় বিএনপির ৫০ নেতা-কর্মীর নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও দেড় থেকে দুই হাজার জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলার পর থেকে গ্রেপ্তার আতঙ্কে দলটির নেতা–কর্মীদের মধ্যে অনেকে গা ঢাকা দিয়েছেন।
বিএনপির নেতা–কর্মীরা দাবি করেন, বিএনপির নেতা–কর্মীদের ধরতে পুলিশ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালাচ্ছে। এর পর থেকে গ্রেপ্তার আতঙ্কে তাঁরা বাড়ি ছেড়েছেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও গঙ্গাচড়া মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আফওয়াজুল ইসলাম আজ শনিবার দুপুরে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ওই মামলায় গতকাল শুক্রবার রাতে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের ছয় নেতাসহ এখন পর্যন্ত নয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিএনপির নেতা আনিছুর রহমান পুলিশি পাহারায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁকেও গ্রেপ্তার করা হবে।
বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের গ্রেপ্তার ছয়জন হলেন মাহমুদুর রহমান (৪৪), শাকিল মিয়া (২২), শফিকুল ইসলাম (২৮), আবদুল কাদের (৩৮), মোস্তাফিজুর রহমান (৩৩) ও মিলন মিয়া (৩০)।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আখেরুজ্জামান, উপজেলার কোলকোন্দ ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মনিরুজ্জামানসহ অনেক নেতা–কর্মী গা ঢাকা দিয়েছেন। এ ব্যাপারে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে আখেরুজ্জামান ও মনিরুজ্জামানের মুঠোফোন নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়।
উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক শামীম মিয়া বলেন, ‘পুলিশ বিএনপির নেতা–কর্মীদের ধরতে পুলিশ বাড়িবাড়ি তল্লাশি চালাচ্ছে। নির্বিচারে গ্রেপ্তার করছে। এ জন্য আমরা এখন বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছি।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে গঙ্গাচড়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমতাজুল ইসলাম বলেন, পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলা ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার ঘটনায় গঙ্গাচড়া থানার এসআই বুলবুল হোসেন বাদী হয়ে মামলা করেছেন। প্রকৃতপক্ষে ওই ঘটনায় যাঁরা জড়িত, তাঁদেরই পুলিশ ধরবে।
গত বৃহস্পতিবার বিকেলে জ্বালানি তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি এবং নারায়ণগঞ্জ ও ভোলায় নেতা-কর্মী নিহত হওয়ার প্রতিবাদে গঙ্গাচড়ার পুরাতন সোনালী ব্যাংক মোড় থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে বিএনপি। মিছিলটি গঙ্গাচড়া বাজারের দিকে যেতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয়। বাধা পেয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে পুলিশ তাঁদের লাঠিপেটা করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। একই সঙ্গে ৫০টি রাবার বুলেট ও বেশ কিছু কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে। সংঘর্ষে গঙ্গাচড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ পুলিশের ২০ সদস্য এবং বিএনপির অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মী আহত হন।