চট্টগ্রামের ডিসি পার্কে বর্ণিল আয়োজনে মাসব্যাপী ফুল উৎসব শুরু
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের ডিসি পার্কে বর্ণিল আয়োজনের মাধ্যমে মাসব্যাপী ফুল উৎসব শুরু হয়েছে। আজ শনিবার বেলা ১১টার দিকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব আবদুর রশিদ ফুল উৎসবের উদ্বোধন করেন। বেলা তিনটায় পার্কটি দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হয়।
ফুল উৎসবের উদ্বোধনের সময় উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. নজরুল ইসলাম, চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন, জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কে এম রফিকুল ইসলামসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা। সচিব আবদুর রশিদ পার্ক এলাকায় প্রবেশের পর জেলা শিল্পকলা একাডেমির সদস্যরা তাঁকে অভ্যর্থনা জানান। এরপর পার্কের ভেতরে ফুল উৎসব এলাকায় যান তিনি। সেখানে জেলার শিল্পকলা একাডেমির সদস্যরা একটি নাচের মাধ্যমে তাঁকে অভ্যর্থনা জানান। এরপর সেখানে ফিতা কেটে মূল ফুল উৎসব এলাকা প্রবেশ করেন।
ফুল উৎসব উদ্বোধনের সময় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব আবদুর রশিদ বলেন, ‘আপনার জানেন একটি অন্তর্বর্তী সরকার চলছে। দীর্ঘদিনের যে একটা অনিয়ম ছিল বিভিন্ন স্তরে, তা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছি। বেশ কিছু ক্ষেত্রে সংস্কারের চেষ্টা আছে। সংস্কারে নানা কমিটির কাজ করছে। মানুষের সহযোগিতায় নিয়মের প্রতিষ্ঠা হবে।’
সরেজমিনে দেখা গেছে, পার্কের ভেতরে জোড়া পুকুরের পশ্চিম পাশে মূলত ফুল উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। সে স্থান সাজানো হয়েছে লক্ষাধিক ফুলের চারা দিয়ে। দেশি-বিদেশি ১৩৬ প্রকারের ফুল রয়েছে। বিদেশি ফুলগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য টিউলিপ, লিলিয়াম, ম্যাগনোলিয়া, ক্যামেলিয়া ফুল। দেশি ফুলের মধ্যে রয়েছে ১৫ প্রজাতির গাঁদা, জবা, কৃষ্ণচূড়া, চন্দ্রমল্লিকাসহ বিভিন্ন ফুল।
মূল ফুল উৎসব এলাকার দক্ষিণ পাশে রয়েছে কবুতর পার্ক। উত্তর পাশে খালি জায়গায় করা হয়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য মঞ্চ। জোড়া পুকুরের উত্তরের পুকুরের মাঝখানে ভাসমান মাচা তৈরি করে সেখানে ফুল দিয়ে সাজানো হয়েছে। ওই পুকুরের পূর্ব পাশে বিভিন্ন রকমের খাবারের স্টল এবং গ্রামীণ মেলার আয়োজন করা হয়েছে। প্রত্যেক দর্শনার্থীকে ৫০ টাকা দিয়ে টিকিট কেটে পার্কে প্রবেশ করতে হয়।
জেলা প্রশাসন সূত্র জানা গেছে, মাসব্যাপী এই উৎসবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, মাল্টিকালচারাল ফেস্টিভ্যাল, গ্রামীণ মেলা, বই উৎসব, ঘুড়ি উৎসব, পিঠা উৎসব, মুভি শো, ভায়োলিন শো, পুতুলনাচসহ নানা আয়োজন রাখা হয়েছে। পুকুরে নৌকাবাইচের জন্য রাখা হয়েছে বেশ কটি নৌকা।
পার্কটি সবার জন্য উন্মুক্ত করার আগেই টিকিটের জন্য দর্শনার্থীদের লম্বা ভিড় দেখা গেছে। ফুল উৎসবে পরিবারের পাঁচ সদস্যকে নিয়ে এসেছিলেন সামশুদ্দিন শাওন নামে এক ব্যক্তি। তিনি লাইন ধরে টিকিটের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আধা ঘণ্টার বেশি সময় অপেক্ষা করছি টিকিটের জন্য। ভেতরে কী আছে জানি না। আশা করছি, গতবারের তুলনায় ভালো কিছু থাকবে।’
লাকী ইসলাম নামের আরেক দর্শনার্থী বলেন, এমনিতে সরকারি ছুটির দিন। তার ওপর সকাল থেকে ঠান্ডা পড়ছিল। ফুল উৎসবে আসবেন কি আসবেন না, তা নিয়ে সংশয় ছিলেন। শেষে চলে এলেন। দেখার জন্য উদ্গ্রীব হয়ে আছেন।