থানায় নিখোঁজের জিডি করা চাচাই ভাতিজাকে হত্যা করেন: পুলিশ
গাজীপুরের শ্রীপুরে অপহরণের পর কিশোর রামিমুল ইসলাম ওরফে বিজয় (১৪) হত্যারহস্য উন্মোচনের দাবি করেছে পুলিশ। আটক ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে জানা গেছে, ভাইয়ের হিসাব থেকে ১০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিতে ভাতিজা রামিমুলকে অপহরণ করে হত্যা করেন চাচা। ঘটনা ধামাচাপা দিতে অতি উৎসাহী হয়ে তিনি নিজেই থানায় গিয়ে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
রামিমুলকে অপহরণের পাঁচ দিন পর গত রোববার বনের ভেতর পাওয়া যায় তার মস্তকবিচ্ছিন্ন লাশ। সে শ্রীপুরের চন্নাপাড়া গ্রামের নূর হোসেনের ছেলে। শ্রীপুরের বেড়াইদেরচালা গ্রামের একটি প্রি-ক্যাডেট স্কুলের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী রামিমুল। লাশ উদ্ধারের পর রামিমুলের চাচা জুয়েল ব্যাপারী (৩৫) ও তাঁর দুই সহযোগীকে আটক করে পুলিশ।
জিজ্ঞাসাবাদে তাঁদের স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে আজ সোমবার বিকেলে এই তথ্য সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ এফ এম নাসিম। তিনি বলেন, টাকার জন্য কিশোর রামিমুলকে অপহরণ করে হত্যা করেন তার চাচা জুয়েল ব্যাপারী। এ ঘটনায় রামিমুলের মা হাসনারা বেগম শ্রীপুর থানায় তিনজনের নামে হত্যা মামলা করেছেন। এই মামলায় রামিমুলের চাচা জুয়েল ব্যাপারী, একই গ্রামের জোবায়েদ ইসলাম (২০) ও ময়মনসিংহে জেলার নান্দাইল উপজেলার পূর্ব দড়িল্লা গ্রামের উজ্জ্বল মিয়া ওরফে শামীমকে (২৫) গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
রামিমুলের স্বজনেরা জানান, ২৬ সেপ্টেম্বর নিখোঁজ হয় রামিমুল। পরদিন একটি মুঠোফোন নম্বর থেকে কল করে কাছে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। মুক্তিপণের টাকা নিয়ে সুসং দুর্গাপুরের একটি এলাকায় যাওয়ার জন্য বলা হয়। এর পর থেকে ওই মুঠোফোন নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়।
আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে পুলিশ জানায়, ভাইয়ের কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিতে কয়েকজনের সহযোগিতায় রামিমুলকে অপহরণ করেন জুয়েল ব্যাপারী। বিষয়টি ধামাচাপা দিতে রামিমুলের বাবা-মায়ের সঙ্গে যোগাযোগ না করেই অতি উৎসাহী হয়ে জুয়েল থানায় নিখোঁজের বিষয়ে জিডি করেন। এরপর রামিমুলের কাছে থাকা মুঠোফোন থেকে অন্য সহযোগীদের দিয়ে তাঁর নিজের মুঠোফোনে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবির জন্য ফোন করান জুয়েল। পরে বিষয়টি তিনি রামিমুলের বাবা-মাসহ পরিবারের সবাইকে জানান।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ এফ এম নাসিম প্রথম আলোকে বলেন, বিষয়টি চাঞ্চল্যকর হওয়ায় পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় জুয়েলের দুই সঙ্গীকে আটক করে। একই সঙ্গে আটক করা হয় চাচা জুয়েল ব্যাপারীকে। তাঁদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। পরে সোমবার বিকেলে তাঁদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।