হরিরামপুরের পদ্মা নদীতে জেলের জালে ১১ কেজির মহাবিপন্ন বাগাড়, ১৩ হাজারে বিক্রি

মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলায় পদ্মা নদীতে এক জেলের জালে ধরা পড়ে ১১ কেজির বাগাড়। আজ সকালে উপজেলার আন্ধারমানিক ঘাটেছবি: প্রথম আলো

মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার পদ্মা নদীতে ১১ কেজি ওজনের মহাবিপন্ন বাগাড় ধরা পড়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে এক জেলের জালে মাছটি ধরা পড়ে। আজ শুক্রবার সকালে উপজেলার আন্ধারমানিক ঘাটে নিলামে এটি ১১ হাজার টাকায় বিক্রি হয়। পরে সিঙ্গাইর উপজেলার এক ব্যক্তি ১৩ হাজার টাকায় কিনে নেন মাছটি।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রাতে উপজেলার আজিমনগর এলাকার পদ্মা নদীতে নৌকায় জাল নিয়ে মাছ ধরতে যান ঢাকার দোহার এলাকার শ্রীচরণ রাজবংশীসহ আরও দুজন। রাত তিনটার দিকে জাল তোলার পর বাগাড়টি দেখতে পান তাঁরা। পরে আজ সকালে মাছটি হরিরামপুরের আন্ধারমানিক ঘাট এলাকার একটি আড়তে নেওয়া হয়। নিলামে কেনার পর মোশারফ হোসেন নামের এক ব্যক্তির কাছে ১৩ হাজার টাকায় মাছটি বিক্রি করেন এক ব্যবসায়ী।

আরও পড়ুন

মাছটির ক্রেতা মোশারফ হোসেন জানান, সামনে পবিত্র রমজান মাস। রোজায় পরিবারের সদস্যদের খাওয়ার জন্য তিনি মাছটি কিনেছেন।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মৌসুমের শুরু থেকে এ পর্যন্ত জেলেদের জালে প্রায় অর্ধশত বাগাড় মাছ ধরা পড়েছে। মানিকগঞ্জ, রাজবাড়ী, পাবনা, ফরিদপুর এবং ঢাকার নবাবগঞ্জ ও দোহারের জেলেদের বড় ফাঁস জালে বোয়াল, পাঙাশ, রুই, কাতলার পাশাপাশি বাগাড়ও ধরা পড়ছে।

হরিরামপুর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা নূরুল হক ইকরাম বলেন, হরিরামপুরের উজানে পদ্মা ও যমুনা নদী দুটি মিশেছে। নদী দুটির মোহনাসহ আশপাশের এলাকায় জেলেদের জালে প্রায়ই বড় বড় মাছ ধরা পড়ছে। নদীতে পানি কমে চর জাগায় মাছের অভয়ারণ্য দিন দিন কমে যাচ্ছে। এরপরও জেলেদের জালে বড় আকারের বোয়াল, বাগাড়, রুই, কাতলা ধরা পড়ছে।

আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘের (আইইউসিএন) তালিকা অনুযায়ী, বাগাড় একটি মহাবিপন্ন প্রাণী। বন্য প্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন অনুযায়ী, বাগাড় শিকার করা, ধরা ও বিক্রি করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। আইন থাকা সত্ত্বেও বাস্তবায়ন না থাকায় বাগাড় শিকার ও প্রকাশ্যে বিক্রি অব্যাহত আছে। এ ধরনের মহাবিপন্ন মাছ প্রকাশ্যে শিকার ও নিলামে বিক্রি হলেও এসব বন্ধে উপজেলা প্রশাসনের তেমন ভূমিকা দেখা যায় না।