ট্রেনের ধাক্কায় হাতির মৃত্যু, ট্রেনচালক সাময়িক বরখাস্ত

ট্রেনের প্রতীকী ছবি

চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় ট্রেনের ধাক্কায় হাতি মারা যাওয়ার ঘটনায় লোকোমাস্টারকে (ট্রেনচালক) সাময়িক বরখাস্ত করেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। আজ বুধবার ট্রেনচালক মো. জামাল উদ্দিনকে বরখাস্ত করা হয়।

বরখাস্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা আনিসুর রহমান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, রেললাইনে ট্রেনের ধাক্কায় গুরুতর আহত হয়ে মারা গেছে একটি হাতি। গত বছরের ১ ডিসেম্বর থেকে এই নতুন নির্মিত রেললাইনে ট্রেন চালুর পর এখন পর্যন্ত এ ধরনের দুর্ঘটনা আর ঘটেনি। এখন এমন দুর্ঘটনা কেন ঘটল এবং এতে কার কার অবহেলা ছিল, তা তদন্ত করে নির্ধারণ করা হবে। তবে সাময়িকভাবে ট্রেনচালক মো. জামাল উদ্দিনকে বরখাস্ত করা হয়েছে। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। যদি আরও কারও গাফিলতি থাকে, তাহলে তাঁদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তবে হাতির মৃত্যুর ঘটনায় নিজের গাফিলতি না থাকার দাবি করেছেন ট্রেনচালক মো. জামাল উদ্দিন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, অভিযোগ আনা হয়েছে অতিরিক্ত গতিতে ট্রেন চালানোর। কিন্তু রেললাইনের যেখানে হাতিটি আঘাত পেয়েছে, সেখানে ট্রেনের নির্ধারিত গতি ছিল ৭০ কিলোমিটার। কিন্তু তিনি ওই সময় ট্রেন চালাচ্ছিলেন ৩০ থেকে ৩৫ কিলোমিটার গতিতে। আর হাতি রক্ষায় তো কোটি কোটি টাকার কাজ করা হয়েছে। তাহলে হাতি রেললাইনে কীভাবে এল? সেখানে গেট ছিল। কিন্তু তা ছিল খোলা। এ দায় তো ট্রেনচালকের নয়। তবু সব দায় তাঁর ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে।

১৩ অক্টোবর রাত সাড়ে আটটার দিকে কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশে ছেড়ে আসা ঈদ স্পেশাল-১০ ট্রেনের ধাক্কায় হাতিটি আহত হয়। চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি বন্য প্রাণী অভয়ারণ্যের এলিফ্যান্ট ওভারপাসের (রেললাইনের ওপর দিয়ে হাতি পারাপারের পথ) উত্তর পাশে এ ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনার দুদিন পর ১৫ অক্টোবর সকালে রেলওয়ের একটি রিলিফ ট্রেনে করে আহত হাতিটিকে ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের বন্য প্রাণী হাসপাতালে নেওয়া হয়। ওই দিন বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাতিটির মৃত্যু হয়।

ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের ভেটেরিনারি অফিসার হাতেম সাজ্জাত মো. জুলকার নাইন জানান, অপ্রাপ্তবয়স্ক স্ত্রী হাতিটির বয়স ৮ থেকে ১০ বছর। একটি স্ত্রী হাতি ১৪ বছর বয়সে প্রাপ্তবয়স্ক হয়। ট্রেনের ধাক্কায় হাতিটির পেছনের ডান পা ভেঙে গেছে। এরপর হাতিটি নিচে গড়িয়ে পড়ে। এতে হাতিটির মেরুদণ্ড ভেঙে যায় এবং মাথায় আঘাত পায়। প্রচুর রক্তপাত হয় হাতিটির।