স্বাস্থ্যে একটি চক্র আছে: উপদেষ্টা নুরজাহান বেগম
অন্তর্বর্তী সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নুরজাহান বেগম বলেছেন, স্বাস্থ্য খাতের মাঠপর্যায় থেকে কেন্দ্রীয় স্তরের প্রতিষ্ঠান পর্যন্ত নানা সমস্যা রয়েছে। এখানে একটি চক্র আছে। এই খাতের সংস্কার নিয়ে কাজ করছে কমিটি। তবে এই সরকার কোনো ভবন নির্মাণ করবে না।
আজ সোমবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে নুরজাহান বেগম এসব কথা বলেন। অন্তর্বর্তী সরকারের দুই মাস পূর্তি উপলক্ষে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সারোয়ার বারী ছাড়াও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা জুলাই–আগস্টের আন্দোলনের সময় নিহত ও আহতদের জন্য সরকার কী করছে, তার বর্ণনা দেন। তিনি বলেন, নিহত ৭৩৭ জনের তথ্য যাচাই করে নিশ্চিত হওয়া গেছে। ছাত্রনেতারা মৃতের সংখ্যা পনেরো শ বলেছেন। বিভিন্ন জেলার জেলা প্রশাসক ও সিভিল সার্জনদের সহায়তায় যাচাই–বাছাইয়ের পর এই তালিকা চূড়ান্ত হবে।
স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বলেন, আন্দোলনের সময় আহত হয়েছেন প্রায় তিন হাজার। এঁদের মধ্যে গুরুতর আহত হয়েছেন সাত–আট শ। দুই চোখ নষ্ট হয়েছে ৩৫ জনের। সাড় তিন শর বেশি মানুষ এক চোখ হারিয়েছেন। একটা হাত বা একটা পা নেই ২২ জনের। এই পরিসংখ্যান দেওয়ার পর স্বাস্থ্য উপদেষ্টা আহতদের চিকিৎসা নিয়ে সরকার কী করছে, তার বর্ণনা দেন। তিনি বলেন, চীন, নেপাল, ফ্রান্সের চিকিৎসকেরা এ দেশে এসেছেন। দুই সপ্তাহ পরে যুক্তরাজ্য থেকে চিকিৎসক আনার আলোচনা চলছে।
দুই মাসের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করার সময় নুরজাহান বেগম বলেন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শয্যার চেয়ে রোগী অনেক বেশি থাকে। আবার কুর্মিটোলা হাসপাতালে শয্যা খালি থাকে। ঢাকা মেডিকেলে রোগীর চাপ কমিয়ে কুর্মিটোলা হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা আরও বাড়ানো যায় কি না, সেই বিষয়ে চিন্তাভাবনা করছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
ওষুধের দাম নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বলেন, ওষুধের জেনেরিক নাম ব্যবহার শুরু হলে ওষুধের দাম কমে আসার সুযোগ আছে। তবে এ ব্যাপারে ওষুধ কোম্পানিগুলোর আপত্তি আছে। এই অবস্থায় জেনেরিক নাম ব্যবহারের উদ্যোগ নিলে সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। নতুন কোনো সমস্যা সৃষ্টি হোক, এটা তাঁরা চান না।
আগের সরকারের আমলে অনেক বিল্ডিং (ভবন) হয়েছে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা নতুন কোনো বিল্ডিং করব না।’
ঢাকা মেডিকেল ও পঙ্গু হাসপাতালকে মডেল সেবা প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে জানিয়ে নুরজাহান বেগম সাংবাদিকদের বলেন, মায়েরা স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশে সেবা পান না। প্রতিষ্ঠানগুলোতে কোনো শৃঙ্খলা নেই, ১৪ জন চিকিৎসক থাকার কথা, থাকেন ২ বা ৩ জন।
সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক নাজমুল হোসেন বলেন, স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইনের খসড়া পরিমার্জনার কাজ চলছে। চলতি সপ্তাহের মধ্যে সেই কাজ শেষ হবে। এরপর তা উপদেষ্টা পরিষদে যাবে।