তল্লাশির সময় পুলিশ সদস্যকে তুলে নিয়ে ছুটল ট্রাক, পরে দুই ‘ডাকাত’ আটক

সুনামগঞ্জে তল্লাশি করার সময় পুলিশ সদস্যকে ট্রাকে তুলে পালানোর সময় আটক দুজন
ছবি: সংগৃহীত

রাতে সড়কে টহল দিচ্ছিল একদল পুলিশ। এর মধ্যে একটি মিনি ট্রাকে তল্লাশির জন্য এক পুলিশ সদস্য ওঠেন। তখন ট্রাকে লুকিয়ে থাকা তিন থেকে চার ব্যক্তি তাঁকে ধরে ফেলেন এবং চালক ইঞ্জিন চালু করে ট্রাকটি দ্রুতগতিতে চালানো শুরু করেন। প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে আরেক থানার পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে ওই ট্রাক আটকে পুলিশ সদস্যকে উদ্ধার ও ট্রাকে থাকা দুজনকে আটক করে।

সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার শরীফপুর এলাকায় গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত গভীর রাতে এ ঘটনা ঘটে। আটক ব্যক্তিরা হলেন ট্রাকচালক টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলার ব্রাহ্মণখোলা গ্রামের মো. শাহ আলম (৪০) ও তাঁর সহযোগী সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ থানার ভান্ডা মল্লিকপুর গ্রামের নুরুল আমিন (৩৮)। তাঁরা ডাকাত দলের সদস্য বলে পুলিশ জানিয়েছে। এই দুজন শান্তিগঞ্জ থানা–পুলিশের হেফাজতে আছেন।

পুলিশ জানায়, সুনামগঞ্জের দিরাই–সুনামগঞ্জ সড়কে গতকাল রাতে দিরাই থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোহন মিয়ার নেতৃত্বে পুলিশের একটি টহল দল দায়িত্ব পালন করছিল। দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে পুলিশ সদস্যরা সড়কের শরীফপুর এলাকায় রাস্তার পাশে একটি মিনি ট্রাক দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেন। এ সময় ট্রাকের সামনে দাঁড়ানো তিন যুবকের গতিবিধি সন্দেহজনক মনে হয় পুলিশের। পুলিশ ট্রাকের দিকে এগিয়ে গেলে ওই তিনজন হাওরের দিকে পালিয়ে যান। এরপর খালি ট্রাক মনে করে পুলিশ সদস্য মামুনুর রশিদ তল্লাশির জন্য ট্রাকের পেছন দিকে ওঠেন। তখন ট্রাকে লুকিয়ে থাকা তিন থেকে চার ব্যক্তি তাঁকে ধরে ফেলেন এবং চালক ইঞ্জিন চালু করে ট্রাকটি দ্রুতগতিতে চালানো শুরু করেন। ট্রাকটি সুনামগঞ্জের দিকে ওই পুলিশ সদস্যকে নিয়ে দ্রুত যেতে থাকে।

তখন এসআই মোহন মিয়া বিষয়টি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানান। এরপর শান্তিগঞ্জ থানা–পুলিশ অভিযানে নামে। পুলিশ ট্রাকটিকে ধাওয়া দিতে থাকে। সড়কের পাথারিয়া বাজারে আসার পর ট্রাকে থাকা দুজন ও মদনপুর এলাকায় আরও একজন লাফ দিয়ে নেমে পড়েন। দিবাগত রাত একটার দিকে ট্রাকটি সুনামগঞ্জ–সিলেট সড়কের শান্তিগঞ্জ থানার সামনে এলে পুলিশের ব্যারিকেড পড়ে। তখন এই বাধা উপেক্ষা করে ট্রাকটি একটি প্রাইভেট কারকে ধাক্কা দেয়। এতে প্রাইভেট কারের চালকসহ তিনজন সামান্য আহত হন। এরপর ট্রাকের চালক শাহ আলম ও নুরুল আমিন পালানোর চেষ্টা করলে স্থানীয় জনতার সহায়তায় পুলিশ তাঁদের আটক করে।

পুলিশ জানায়, পুলিশ সদস্য মামুনুর রশিদ সামান্য আহত হন, তিনি প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। ট্রাকটি তল্লাশি করে দুটি রামদা, দুটি লোহার পাইপ ও একটি কাঠের লাঠি উদ্ধার করা হয়। আটক ব্যক্তিরা ডাকাতি–চুরির সঙ্গে জড়িত। তাঁদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা আছে।

সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকির হোসেন বলেন, এ ঘটনায় আটক দুজনের বিরুদ্ধে দিরাই থানায় পুলিশের কাজে বাধা ও ডাকাতির প্রস্তুতির অভিযোগে মামলা প্রক্রিয়াধীন। পলাতক ডাকাতদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।