ঠাকুরগাঁওয়ে শিক্ষার্থীদের মিছিলে পুলিশের লাঠিপেটা
ঠাকুরগাঁওয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচিতে লাঠিপেটার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ কারণে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে আদালত চত্বরে যেতে পারেননি শিক্ষার্থীরা। তবে পরে তাঁরা আদালতের ফটকের সামনে পুলিশের বেষ্টনীর মধ্যে সড়ক অবরোধ করে কর্মসূচি পালন করেন।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, ঠাকুরগাঁওয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনের কর্মসূচি শুরু হওয়া থেকে ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয়ের বড়মাঠ থেকে সব কটি কর্মসূচির সূচনা হয়। কিন্তু আজ ওই এলাকায় আগে থেকেই পুলিশ টহল জোরদার করে। ওই এলাকায় দু-একজন শিক্ষার্থী এলে তাঁদের সরিয়ে দেয় পুলিশ। পুলিশের বাধা এড়াতে শিক্ষার্থীরা সেখান থেকে শহরের আর্টগ্যালারি মেড়ে সরে যান। শিক্ষার্থীদের অবস্থান টের পেয়ে পুলিশ আর্টগ্যালারি মোড়ে অবস্থান নিয়ে সড়কে ব্যারিকেড দেয়। সংখ্যা বাড়লে দুপুর ১২টার দিকে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে আদালতের দিকে এগিয়ে যান। সে সময় তাঁরা পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে ফেলে ‘বুক পেতেছি গুলি কর, বুকে আমার কঠিন ঝড়’, ‘লেগেছে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে দিতে আদালতের দিকে এগিয়ে যেতে থাকেন।
কিন্তু কিছুদূর এগোতেই শিক্ষার্থীরা আবার পুলিশের বাধার মুখে পড়েন। সে সময় ঠাকুরগাঁও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ বি এম ফিরোজ ওয়াহিদ তাঁদের ফিরে যেতে অনুরোধ করেন। কিন্তু শিক্ষার্থীরা অনুরোধ উপেক্ষা করে নানা স্লোগান দিতে থাকেন। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীরা পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে ফেলেন। সে সময় পুলিশের সদস্যরা শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটা করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। ছত্রভঙ্গ হওয়ার পর শিক্ষার্থীরা আবারও একত্র হয়ে পুলিশের বেষ্টনীর মধ্যেই সড়কে অবস্থান নিয়ে নানা স্লোগান দিতে থাকেন। বেলা পৌনে দুইটার দিকে শিক্ষার্থীরা সড়ক ছেড়ে দেন।
আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থী আশিকুর রহমান দাবি করেন, পুলিশের লাঠিপেটায় অন্তত ১০ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ছয়জন ছাত্রী রয়েছেন।
আরেক শিক্ষার্থী হাবিবুল্লাহ সোহান বলেন, ‘৯ দফা দাবিতে আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা নানা কর্মসূচি পালন করছি। আমাদের সব কর্মসূচিই ছিল শান্তিপূর্ণ। আজকের “মার্চ ফর জাস্টিস” কর্মসূচিতে পুলিশ দুই দফা বাধা দেয়। কিন্তু শিক্ষার্থীরা সেই বাধা উপেক্ষা করে কর্মসূচি পালন করেছে। শান্তিপূর্ণ এই কর্মসূচিতে পুলিশের লাঠিপেটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।’
ঠাকুরগাঁওয়ের পুলিশ সুপার উত্তম প্রসাদ পাঠক শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচি নির্বিঘ্নে করতে সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়। তবে আদালত এলে তাঁদের মিছিল ফিরিয়ে নিতে অনুরোধ করা হয়। কিন্তু মিছিলে থাকা কিছু শিক্ষার্থী পুলিশের অনুরোধ উপেক্ষা করে এগিয়ে চেতে চাইলে পুলিশ তাঁদের বাধা দেয়। পরে পুলিশ তাঁদের বোঝালে তাঁরা শান্ত হয়ে সড়কে ঘণ্টা দুয়েক অবস্থান করে চলে যান।