নিখোঁজের এক দিন পর করতোয়ায় মিলল কৃষকের লাশ, পরিবারের দাবি হত্যা

লাশ উদ্ধারপ্রতীকী ছবি

পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় নিখোঁজের এক দিন পর করতোয়া নদী থেকে শফিকুল ইসলাম ওরফে ঠান্ডু (৫২) নামের এক কৃষকের ভাসমান লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পরিবারের সদস্যদের ধারণা, হত্যার পর তাঁর লাশ নদীতে ফেলে দেওয়া হয়েছিল। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে এক ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ।

আজ শুক্রবার সকালে উপজেলার মাড়েয়া বামনহাট ইউনিয়নের করতোয়া নদীর সাঁওতালের ঘাট থেকে শফিকুলের লাশটি উদ্ধার করা হয়। এর আগে গত বুধবার সন্ধ্যার পর থেকে নিখোঁজ ছিলেন তিনি।

শফিকুল ইসলাম বোদা উপজেলার বড়শশী ইউনিয়নের সামের ডাঙা এলাকার বাসিন্দা ও পেশায় একজন কৃষক ছিলেন। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি এক ছেলে ও তিন মেয়ের বাবা। অন্যদিকে আটক ওই ব্যক্তির নাম শফিকুল ইসলাম। তিনিও একই এলাকার বাসিন্দা।

নিহত ব্যক্তির পরিবার ও স্থানীয় কয়েকজনের বরাতে বড়শশী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. খালেদ বলেন, গতকাল সকালে শফিকুলকে খুঁজতে গিয়ে পাশের কাজলদীঘি কালিয়াগঞ্জ ইউনিয়নের করতোয়া নদীর দইখাতা ঘাটে তাঁর ব্যবহৃত চশমার ভাঙা অংশ ও একটি কৌটা খুঁজে পান পরিবারের লোকজন। এ সময় একাধিক ব্যক্তির পায়ের ছাপ দেখে ধস্তাধস্তি হয়েছে বলে ধারণা করেন তাঁরা। পরে বিষয়টি জানালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন পুলিশ সদস্যরা। এরই মধ্যে আজ সকালে দইখাতা ঘাট থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে সাঁওতালের ঘাট এলাকায় করতোয়া নদীতে এক ব্যক্তির ভাসমান লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে স্বজনেরা সেটিকে শফিকুলের বলে শনাক্ত করেন। প্রাথমিক সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।

ইউপি সদস্য মো. খালেদ আরও বলেন, জমিজমাসংক্রান্ত বিরোধের জেরে শফিকুলকে হত্যার পর নদীতে ফেলে দেওয়া হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। লাশটি উদ্ধারের সময় তাঁর পরনে কোনো কাপড় ছিল না।

এ প্রসঙ্গে শফিকুল ইসলামের চাচাতো ভাই নুর জামাল (৬২) বলেন, ‘স্থানীয় এক ব্যক্তির সঙ্গে শফিকুলের দীর্ঘদিন ধরেই জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল। সম্প্রতি ওই পক্ষ সমাধানের কথা বলে তাঁর সঙ্গে ভালো সম্পর্ক তৈরি করে। বুধবার সন্ধ্যায় এক ব্যক্তি ফোন করে জমির কাগজপত্র নিয়ে শফিকুলকে কালিয়াগঞ্জ বাজারে যেতে বলেন। এর পর থেকে নিখোঁজ ছিলেন শফিকুল। লাশটি উদ্ধারের সময় তাঁর শরীরে কাপড়চোপড় ছিল না। গলায় কেবল একটি দড়ি বাঁধা ছিল। এ ঘটনায় আমরা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বোদা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক বলেন, ‘প্রাথমিক সুরতহালে আমরা ধারণা করছি, ওই ব্যক্তিকে শ্বাস রোধ করে হত্যার পর পানিতে ফেলে দেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা চলমান।’