কুমারখালীতে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ, ভাঙা হলো কলেজ ভবনের দেয়াল
কুষ্টিয়ার কুমারখালীর চৌরঙ্গী কলেজের আধা পাকা ভবন নির্মাণকাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই ঘটনায় নির্মাণাধীন দেয়াল ভেঙে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। আজ বুধবার বেলা তিনটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়দের ভাষ্য, ভবন নির্মাণে নিম্নমানের ইট, খোয়া ব্যবহার করা হচ্ছে। সিমেন্ট বালুও পরিমাণ মতো দেওয়া হচ্ছে না। এসব অনিয়মের কারণে দুই সপ্তাহ আগে কাজ বন্ধ করে দিয়েছিল কলেজ কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় লোকজন। আজ আবার একইভাবে কাজ চলছিল। সে জন্য স্থানীয় কিছু ছেলেরা দেয়াল ভেঙে দিয়ে চলে গেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, কলেজের খেলার মাঠের দক্ষিণপাশে তিন কক্ষ বিশিষ্ট একটি ভবন নির্মাণের কাজ চলছে। আজ বিকেলে নির্মাণ করা ভাঙা দেয়ালের পাশে বালু, সিমেন্ট লাগানো ইটগুলো পড়ে আছে। কয়েকজন শ্রমিক যন্ত্রপাতি ধোঁয়া–মোছার কাজ করছেন।
নির্মাণশ্রমিক রাশিদুল ইসলাম বলেন, সকাল থেকে তাঁরা ভবনের দেয়াল নির্মাণের কাজ করছিলেন। হঠাৎ বিকেলের দিকে তিনটি মোটরসাইকেলে কয়েকজন যুবক এসে তাঁদের দেয়াল ভেঙে দিয়ে চলে যায়। তিনি কাউকে চিনতে পারেননি।
চৌরঙ্গী কলেজের অধ্যক্ষ লাল মুহাম্মদ বলেন, ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে তিন কক্ষ বিশিষ্ট আধা পাকা টিনশেডের একটি ঘর নির্মাণকাজ চলছে। তবে ইটের মান খারাপ হওয়ায় দুই সপ্তাহ আগে কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আজ কাজ চলছে কি না, তা জানা নেই। দেয়াল ভেঙে দেওয়ার বিষয়টিও তিনি জানেন না। বারবার ঠিকাদারকে বলেও ভালোমানের কাজ হচ্ছে না। তিনি প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
২০২৩-২৪ অর্থবছর শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের ‘মেরামত’ বরাদ্দের আওতায় চৌরঙ্গী কলেজের ২০ লাখ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। কাজের ঠিকাদার কুষ্টিয়ার সিনথিয়া এন্টারপ্রাইজ। তবে কলেজে ভবন না থাকায় অধ্যক্ষের বিশেষ অনুরোধে ঠিকাদার মেরামতের বদলে নতুন আধা পাকা ঘর নির্মাণের কাজ করছেন।
ঠিকাদার আহম্মেদ আলী বলেন, কলেজ কর্তৃপক্ষ ও এলাকাবাসীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে নিম্নমানের ইট বাতিল করে আজ ভালো ইট দিয়ে কাজ চলছিল। তবু কে বা কারা নির্মাণাধীন দেয়াল ভেঙে দিয়েছে। বিষয়টি দুঃখজনক। প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ করবেন তিনি। বরাদ্দ মেরামতের হলেও অধ্যক্ষের অনুরোধে তিনি আধা পাকা ভবন নির্মাণ করছেন।
জেলা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী মো. জাফর আলী বলেন, নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় একবার কাজ বন্ধ করা হয়েছিল। ফের নিম্নমানের মালামাল ব্যবহার হলে আবারও কাজ বন্ধ করা হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মিকাইল ইসলাম বলেন, সরকারি কাজে কোনো অনিয়মের সুযোগ নেই।