মাগুরায় খালের ‘প্রাণ ফেরাতে’ কচুরিপানা পরিষ্কার করছেন স্বেচ্ছাসেবকেরা
মাগুরার শালিখা উপজেলায় কানুদা খালের পানির প্রবাহ ফেরাতে কচুরিপানা পরিষ্কারের উদ্যোগ নিয়েছে প্রশাসন। আজ শুক্রবার কয়েক শ স্বেচ্ছাসেবক ও নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের অংশগ্রহণে কার্যক্রমটি শুরু হয়েছে। কর্মকর্তারা বলেন, কচুরিপানা সরাতে পারলে খালের পানি স্থানীয় লোকজন নানা কাজে ব্যবহার করতে পারবেন। পাশাপাশি এটিকে কেন্দ্র করে মানুষের বিনোদনের একটি জায়গা তৈরি হবে।
স্বেচ্ছাসেবকদের পাশাপাশি শ্রমিকদের নিয়ে আগামী দুই দিনের মধ্যে খালের দেড় কিলোমিটারের কচুরিপানা পরিষ্কার করা হবে বলে জানা গেছে। আজ সকালে উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবু নাসের বেগ। এ সময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আবদুল কাদের, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াসুর রহমান, জেলা পরিষদ সদস্য মুন্সী আবু হানিফসহ বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার লোকজন উপস্থিত ছিলেন। পরে খাল-সংলগ্ন ইকোপার্কে বৃক্ষ রোপণ করেন জেলা প্রশাসক।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবু নাসের বেগ বলেন, ‘কোনো অতিথি এলে জিজ্ঞেস করে, আপনার জেলায় কী আছে? সেই প্রশ্নের একটি উত্তর হতে পারে, এই কানুদা খালের পাড়। এই খালকে কেন্দ্র করে একটি সুন্দর বিনোদনকেন্দ্র গড়ে উঠতে পারে। যার অংশ হিসেবে এই খালের কচুরিপানা পরিষ্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এতে স্থানীয় লোকজন যেমন লাভবান হবে, তেমনি মাগুরার মানুষের ঘোরার একটা জায়গা হবে।’
উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানান হয়েছে, আড়পাড়া মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স প্রান্ত থেকে খালের দেড় কিলোমিটার পর্যন্ত কচুরিপানা পরিষ্কার করা হচ্ছে। এই কার্যক্রমে অংশ নেন কয়েক শ স্বেচ্ছাসেবী। তাঁদের মধ্যে ছিলেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মী, আনসার সদস্য, স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মী ও বিডি ক্লিন নামে একটি সংগঠনের কর্মীসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার আড়পাড়া ও তিলখড়ি ইউনিয়নের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত কানুদা খালটি ফটকি নদীতে পতিত হয়েছে। বর্ষা মৌসুমে ২২টি খালের পানি এই কানুদা খাল দিয়ে নেমে নদীতে যায়। ২০১৯ সালে খালটি পুনঃখনন করা হয়। তবে কয়েক বছরের মধ্যে এটি কচুরিপানায় ঢাকা পড়েছে। পানিও নষ্ট হয়ে গেছে। এ কারণেই খালের কচুরিপানা পরিষ্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, খালের দুই পাড়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রায় ২৪ একর জমি রয়েছে। যেখানে কয়েক বছর আগে একটি পার্ক বা বিনোদনকেন্দ্র গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়। সম্প্রতি সেখানে বনভোজনের জন্য মঞ্চ তৈরির পাশাপাশি কিছু সুবিধা বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি খালের পাড়ে কয়েক শ কৃষ্ণচূড়াসহ নানা রকম কয়েক হাজার গাছ রোপণ করা হয়েছে।
ইউএনও হরেকৃষ্ণ অধিকারী বলেন, খালে পরিষ্কার পানি হলে মানুষ নানাভাবে উপকৃত হবেন। এখানে খালের দুই পাড়ে একটি বিনোদনকেন্দ্র গড়ে তোলা হচ্ছে। এ উদ্দেশ্যে এখানে একটি মুক্ত মঞ্চ, শৌচাগার, রান্নার জায়গা ও একটি কটেজ নির্মাণ করা হচ্ছে।