সারা রাত চলে যাবে, তবু শেখ হাসিনার দুর্নীতির ফিরিস্তি শেষ হবে না: হাবিব উন নবী খান

কুমিল্লার বুড়িচংয়ে কর্মী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন দলের যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান। শুক্রবার বিকেলে উপজেলার ইছাপুরা এলাকায়ছবি: প্রথম আলো

শেখ হাসিনার দুর্নীতির কথা বলতে গেলে সারা রাত চলে যাবে, তবু তাঁর দুর্নীতির ফিরিস্তি শেষ হবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান। শুক্রবার বিকেলে কুমিল্লার বুড়িচংয়ে এক কর্মী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ মন্তব্য করেন। উপজেলার ইছাপুরা এলাকায় এ সমাবেশের আয়োজন করে উপজেলা বিএনপি ও সহযোগী সংগঠন।

হাবিব উন নবী খান বলেন, ‘দুর্নীতি করে দেশের ব্যাংকের টাকা শেষ করে দিয়েছে হাসিনা সরকার, কোনো ব্যাংকে এখন টাকা নেই।...ইউনূস সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর একটি কমিটি করেছিল। সেই কমিটির কাজ ছিল শেখ হাসিনার আমলে যা যা দুর্নীতি হয়েছে, তার হিসাব করা। এই কমিটির লোকেরা বিএনপি করেন না, তাঁরা নিরপেক্ষ মানুষ। ইতিমধ্যে তাঁরা রিপোর্ট জমা দিয়েছেন, ২০০৯ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ২৯ লাখ কোটি টাকা লুটপাট করে বিদেশে পাঠিয়েছেন হাসিনা ও তাঁর দলের লোকজন।’

বিএনপির এই যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘তারা (আওয়ামী লীগ) প্রতিবছর লুটপাট করেছে, বিদেশে পাঠিয়েছে ১ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, পদ্মা সেতুতে খরচ হয়েছে কয় টাকা, পদ্মা সেতুতে খরচ হয়েছে ৩০ হাজার কোটি টাকা। সুতরাং প্রতিবছর আপনি ছয়টি পদ্মা সেতুর টাকা বিদেশে পাঠিয়েছেন, লুটপাট করেছেন। শেখ হাসিনার দুর্নীতির কথা বলতে গেলে সারা রাত চলে যাবে, তবু তাঁর দুর্নীতির ফিরিস্তি শেষ হবে না। ওনার বাপের নামে স্যাটেলাইট বানিয়েছেন তিন হাজার কোটি টাকা দিয়ে, যেটার দাম দেড় হাজার কোটি টাকা। এই স্যাটেলাইট কোনো কাজে লাগে না; শুধু লুটপাটের জন্য স্যাটেলাইট বানানো হয়েছে।’

হাবিব উন নবী খান বলেন, ‘বিচার বিভাগের রায়ের মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনঃপ্রবর্তনের সুযোগ এসেছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে জাতির ও আমাদের প্রত্যাশা, শিগগিরই দেশে একটি নির্বাচনের ব্যবস্থা করে নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দেবেন। দেশের জনগণ যে মূল্যবান ভোটের অধিকার হারিয়েছিলেন, সেই ভোটের অধিকার ফিরে পাবেন নির্বাচনের মাধ্যমে। যেই গণতন্ত্রকে শেখ হাসিনা হত্যা করেছিলেন, সেই গণতন্ত্র ফিরে পাবেন মানুষ।’

হাবিব উন নবী খান আরও বলেন, ‘শেখ হাসিনা কুমিল্লাকে বিভাগ করতে চান না। কারণ, কুমিল্লার মানুষকে তিনি ভীষণ অপছন্দ করেন। তিনি বলেছেন, “কুমিল্লার নামের সঙ্গে ‘কু’ আছে, তাই আমি কুমিল্লা নামে বিভাগ দেব না।” আমি তাঁকে প্রশ্ন করতে চাই, হাসিনা মানে কী? হাসিনা নামের অর্থ সুন্দরী। আপনি কি নিজে কাজের মাধ্যমে সুন্দরী ছিলেন? বিগত সময়ে আপনি কাজের মাধ্যমে আপনার নামের যথার্থতা রেখেছেন কি না? আপনার নামের অর্থ সুন্দরী হলেও আপনি সুন্দর কাজ করেননি।’

কর্মী সমাবেশে প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপির কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিম ভূঁইয়া। সমাবেশের উদ্বোধন করেন কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক এবং বিএনপির কেন্দ্রীয় ত্রাণ ও পুনর্বাসন সম্পাদক আমিন উর রশিদ (ইয়াছিন)। উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. কবির হোসেনের সভাপতিত্বে সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য শেখ মজিবুর রহমান, কুমিল্লা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক উদবাতুল বারী, সদস্যসচিব ইউসুফ মোল্লা, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্যসচিব মো. জসিম উদ্দিন প্রমুখ।