রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ জায়গা থেকে স্বৈরাচারের দোসরদের সরিয়ে দিতে হবে: জামায়াতের আমির

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আয়োজিত কর্মী সম্মেলনে জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান। আজ সকালে শহরের লোকনাথ দিঘির টেংকের পাড় ময়দানেছবি: প্রথম আলো

জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘জাতি চায়, যাঁরা চিহ্নিত স্বৈরাচারের দোসর, তাঁরা যেন রাষ্ট্রের কোনো স্তরে এবং কোথাও না থাকেন। এঁরা চিহ্নিত। এ জন্য সরকারের কাছে আমাদের বার্তা, রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ জায়গা থেকে তাঁদের অবশ্যই সরিয়ে দিতে হবে। তাঁরা নৈতিক অধিকার হারিয়েছেন। এই রাষ্ট্রের জনগণের ট্যাক্সের টাকায় বেতন তাঁরা আর গ্রহণ করতে পারবেন না। কারণ, তাঁরা খুনিদের ডান হাত ও বাঁ হাত ছিলেন।’

আজ মঙ্গলবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের লোকনাথ দিঘির টেংকের পাড় ময়দানে দলের কর্মী সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।

জামায়াতের আমির বলেন, ‘এই সরকারে কাছে জাতির অনেক প্রত্যাশা। চিহ্নিত স্বৈরাচারের দোসররা যদি থাকে, তাহলে এই রাষ্ট্র, সরকার ও দেশকে তারা ব্যর্থ করে দেবে। সেই সঙ্গে এই বিপ্লবকে ব্যর্থ করে দেবে; জনগণের স্বপ্নের মৃত্যু হবে। আমরা জনগণের স্বপ্নের মৃত্যু হতে দিতে পারি না।’

আয়নাঘরকে আওয়ামী সরকারের অন্যতম আবিষ্কার ছিল জানিয়ে জামায়াতের এই নেতা বলেন, আয়নাঘর থেকে খুব কমসংখ্যক সৌভাগ্যবান মানুষ আপনজনের কাছে ফিরে এসেছেন। বেশির ভাগেরই কোনো খবর পাওয়া যাচ্ছে না। এর মানে, তাঁদের শেষ করে দেওয়া হয়েছে। তাঁরা বেঁচে থাকলে এত দিনে ফিরে আসতেন। তাঁদের কোথায় দাফন করা হলো, পরিবারকে তা–ও জানতে দেওয়া হলো না।

আওয়ামী লীগ মাঝেমধ্যে অঘটন ঘটাতে চাচ্ছে বলে মন্তব্য করেন শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, ‘আপনারা দেখেছেন, আনসার–কাণ্ড ঘটিয়েছে, বিচারিক ক্যু করতে চেয়েছিল। বাংলাদেশের জনগণ সবকিছু ব্যর্থ করে দিয়েছে। এখন তারা ইসলামি চাদর গায়ে দিয়ে নতুনরূপে আবির্ভূত হচ্ছে। ছাত্রলীগের নেতারা বিশেষ একটি ধর্মীয় সংগঠনের নামে আমাদের কোমলমতি সন্তানদের উসকে দিয়ে রাস্তায় অশান্তির সৃষ্টি করতে চাচ্ছে। বিশেষ ধরনের পতাকা এরা বহন করে। বাংলাদেশকে দুনিয়ার সামনে জঙ্গি, চরমপন্থী ও বিশৃঙ্খল রাষ্ট্র হিসেবে দেখানোর জন্য তাদের এই চক্রান্ত। এই জাতি সম্মিলিতভাবে তাদের চক্রান্ত ব্যর্থ করে দেবে।’

শফিকুর রহমান আরও বলেন, ‘এমন একটি নতুন বাংলাদেশ দেখতে চাই, যে বাংলাদেশে নারী-পুরুষ–জাতি–বর্ণনির্বিশেষে কোনো মানুষ তাঁর ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হবেন না। বিভিন্ন ধর্ম ও বর্ণের মানুষ সামাজিক সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে অহিংসামূলক একটি সমাজ গড়ে তুলবেন। প্রত্যেক শিশু রাষ্ট্রের কাছে সব অধিকার পাবে। পড়ালেখা করে কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও মাদ্রাসার পাট চুকিয়ে যখন বের হবে, তখন বেকারত্বের অভিশাপ কাউকে গ্রাস করবে না।’  

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সাধারণ সম্পাদক এ টি এম মাসুম। সভাপতিত্ব করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির ও কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য মোহাম্মদ গোলাম ফারুক।