হেফাজতে নির্যাতন ও হত্যার অভিযোগে সাতক্ষীরার আদালতে মামলা, আসামি সাবেক এমপি-এসপি-ওসি
ছয় বছর আগে সাতক্ষীরার শ্যামনগরে রেজাউল ইসলাম নামের এক ব্যক্তিকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে নির্যাতন ও গুলি করে হত্যার অভিযোগে সাতক্ষীরা-৪ (শ্যামনগর-কালীগঞ্জ আংশিক) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) এস এম জগলুল হায়দারসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার নিহত রেজাউলের ভাই সাইদুল ইসলাম বাদী হয়ে সাতক্ষীরা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মামলার আবেদন করেন। আদালতের বিচারক চাঁদ মো. আবদুল আলীম আল রাজী নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে খুলনার উপপুলিশ মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) তিনি নিজে বা অপরাধে জড়িত ব্যক্তিদের পদমর্যাদার নিচে নন, এমন কোনো পুলিশ কর্মকর্তার মাধ্যমে অভিযোগ তদন্ত করে আগামী ২৮ নভেম্বরের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
বাদীপক্ষের আইনজীবী এ টি এম বাসারতুল্লাহ আওরঙ্গী বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন। মামলার উল্লেখযোগ্য অন্য আসামিরা হলেন সাবেক এমপি জগলুল হায়দারের ভাই এস এম জহুরুল হায়দার ও এস এম কামরুল হায়দার, ছেলে রাজীব হায়দার, সাতক্ষীরার তৎকালীন পুলিশ সুপার সাজ্জাদুর রহমান, শ্যামনগর থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইলিয়াস হোসেন, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার দেবদাস মণ্ডল ওরফে দেবী, ঈশ্বরীপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শুকুর আলী, তাঁর ছেলে সাইফুল্লাহ আলম, আশাশুনির দরগাপুর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান মিয়ারাজ আলী, সাংবাদিক ও সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আকবর কবীর প্রমুখ।
মামলার আরজিতে বলা হয়, ২০১৮ সালের ২৮ জুলাই রাতের খাবার খেয়ে শ্যামনগর উপজেলার বাদঘাটা গ্রামের রেজাউল ইসলাম স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। রাত ১১টার দিকে আসামিরা বাড়িতে এসে তাঁকে ডাকাডাকি করেন। দরজা খুলে বেরিয়ে আসামাত্রই পুলিশসহ আসামিরা তাঁকে হাতকড়া পরিয়ে ব্যাপক মারধর করেন। পরে পুলিশের পিকআপে তাঁকে শ্যামনগর থানায় নেওয়া হয়। পরে তাঁর স্ত্রী মাকসুদা ও ভাই সাইদুলের সামনে তাঁকে আরেক দফা নির্যাতন করা হয়। আসামি জহুরুল হায়দার ও বড় ভেটখালী গ্রামের আবদুল গফুরের নির্দেশে তাঁকে থানা থেকে পুলিশের গাড়িতে উপজেলার খানপুর বাজার থেকে ৪০০ মিটার পশ্চিমে রাস্তার পাশে কালভার্টের ওপর নেওয়া হয়। পরে পুলিশের থেকে অস্ত্র নিয়ে আসামি আবদুল গফুর মাথায় গুলি করে তাঁকে হত্যা করেন। পরে শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের রোগী বহনকারী ট্রলিতে রেজাউলের লাশ পাওয়া যায়। পরদিন বিকেলে সুরতহাল ও ময়নাতদন্ত শেষে পুলিশ তাঁর লাশ বাড়িতে পৌঁছে দেয়।