সাভারে চলন্ত বাসে অলংকার ছিনতাই, টের পাননি অন্য যাত্রীরা

ছিনতাইপ্রতীকী ছবি

বাসচালকের পেছনের আসনে বসা ছিলেন কল্পনা সাহা। ঠিক পাশেই নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসনে ছিলেন তাঁর মেয়ে রুপা ও তুলি সাহা। আর দুজনের মাঝখানে বসা রুপার পাঁচ বছর বয়সী মেয়ে অঙ্গীকা সাহা।

হঠাৎ পেছন থেকে দুই যাত্রী উঠে এসে তাঁদের আসনের পাশে দাঁড়িয়ে চালকের সামনেই বাস থামানোর নির্দেশ দেন। চলন্ত বাসের মধ্যেই ১৫–২০ জন যাত্রীর চোখ ফাঁকি দিয়ে কৌশলে অঙ্গীকার গলায় ধারালো ছুরি ধরেন দুই যাত্রীর একজন। এ সময় যাত্রীবেশে কল্পনার পাশে বসা ছিনতাইকারীও ছুরি বের করেন। একপর্যায়ে তাঁদের হুমকির মুখে নিজেদের সঙ্গে থাকা গয়নাগুলো খুলে দিতে বাধ্য হন রুপা ও তুলি।

গতকাল বুধবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সাভার বাসস্ট্যান্ড–সংলগ্ন কাঁচাবাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি করেছেন রুপা সাহা। এ ঘটনায় গতকাল রাতেই থানায় লিখিত অভিযোগ দেন তাঁর বড় বোন বীথি সাহা।

ঘটনার বর্ণনায় রুপা জানান, গতকাল বড় বোন বীথির বাসায় একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গাজীপুরের কালিয়াকৈর থেকে মা কল্পনা, বোন তুলি ও মেয়ে অঙ্গীকাকে নিয়ে বাসে করে সাভার যাচ্ছিলেন। আশুলিয়ার ডিইপিজেড এলাকায় যানজটের কারণে বাসটি আটকে যায়। তাঁরা বাস থেকে নেমে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। সড়কে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার পর সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে ‘সাভার পরিবহন’ নামের একটি বাসে চড়ে বসেন। বাসটিতে ১৫-২০ জন যাত্রী ছিলেন। এটি সাভারের রেডিও কলোনি বাসস্ট্যান্ডে আসার কিছুক্ষণ পরেই পেছন থেকে দুই যাত্রী সামনে তাঁদের আসনের পাশে এসে দাঁড়ান। পরে কৌশলে শিশুটির গলায় ধারালো অস্ত্র ধরে ভয় দেখিয়ে গায়ে থাকা সোনার অলংকার খুলে দিতে বলেন। এ সময় যাত্রীবেশে কল্পনার পাশে বসা ছিনতাইকারীও ছুরি বের করেন। পরে রুপা ও তুলি দুই ভরি ওজনের দুটি সোনার চেইন খুলে তাঁদের হাতে দেন। পুরো ঘটনাটি যাত্রীদের অগোচরে ঘটে। এরপর বাসটি থামালে কল্পনার কান থেকে টান দিয়ে দুল নিয়ে সাভার বাসস্ট্যান্ড–সংলগ্ন কাঁচাবাজার এলাকায় নেমে পালিয়ে যান ওই তিন ব্যক্তি।  

চালক ও তাঁর সহকারী এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে বলে ধারণা করছেন রুপা। তাঁর দাবি, বাসে একমাত্র চালক ও তাঁর সহকারী সরাসরি ঘটনাটি ঘটতে দেখেছেন। আর ছিনতাই শেষে ওই ব্যক্তিরা খুব সহজেই বাস থেকে নেমে গেছেন।

রুপা সাহা প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার মা বাসের চালককে বলেছিল, “এর সঙ্গে আপনারাও জড়িত।” তখন বাসের চালক কিছু না বলে চুপ করে ছিলেন। ছিনতাইকারীরা এমনভাবে কাজটা করছে, বাসের অন্য যাত্রীরা কেউ কিছুই বুঝতে পারেননি। আমরাও ভয়ে কিছুই বলতে পারিনি।’

লিখিত অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন সাভার মডেল থানার পরিদর্শক (অপারেশন) নয়ন কারকুন। তিনি বলেন, ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। দ্রুতই প্রকৃত অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা সম্ভব হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।