ফরিদপুরের ভাঙ্গা বাজার
সড়কে কাদাপানি, ভোগান্তি
ভাঙ্গা বাজারে সহস্রাধিক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। আছে কয়েকটি ব্যাংকের শাখা। এই বাজারের দুটি সড়কে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে।
ফরিদপুরের ভাঙ্গা বাজারের প্রধান গলিসহ দুই সড়কের বেশির ভাগ অংশ ভাঙাচোরা। বৃষ্টি হলেই কাদাপানিতে একাকার হয়ে যায় সড়কগুলো। এতে বাজারের ব্যবসায়ী, বাজার করতে আসা ক্রেতা ও বাজার সড়ক দিয়ে যাঁরা চলাচল করেন, তাঁদের ভোগান্তি পোহাতে হয়।
স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভাঙ্গা বাজারে তিনটি সড়ক রয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক থেকে ভাঙ্গা থানার দিকে চলে গেছে একটি সড়ক, এর দৈর্ঘ্য ৮০০ মিটার দৈর্ঘ্য। ঈদগাহের মোড় থেকে মনোহরপট্টি পর্যন্ত চলে গেছে সাড়ে ছয় শ মিটার দৈর্ঘ্যের আরেকটি সড়ক। আরেকটি সড়ক ইউসিবি ব্যাংকের পাশ দিয়ে কাপড়পট্টির দিকে চলে গেছে, এর দৈর্ঘ্য ৪০০ মিটার। ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক থেকে ভাঙ্গা থানাগামী সড়কটি কয়েক মাস আগে পুনর্নির্মাণ করা হয়েছে। বাজারের তিনটি মধ্যে এই সড়কের অবস্থা ভালো। কিন্তু ঈদগাহের মোড় থেকে মনোহরপট্টিগামী সড়কটির অবস্থা একেবারে খারাপ। আর ইউসিবি ব্যাংকের পাশ দিয়ে কাপড়পট্টি পর্যন্ত সড়কটির ৪০০ মিটার মধ্যে অন্তত ২০০ মিটার একেবারে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
৮ আগস্ট সরেজমিন দেখা গেছে, ভাঙ্গা বাজারে হাজারের বেশি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। এ ছাড়া রয়েছে বিভিন্ন পণ্যের বড় বড় শোরুম। এখানে সোনালী ব্যাংক, কৃষি ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক, যমুনা ব্যাংক, ইউসিবি ব্যাংক, কর্মসংস্থান ব্যাংক, এনআরবিসি ব্যাংকের শাখা রয়েছে। এ ছাড়া এই বাজারে রয়েছে টিন, রড, সিমেন্ট ও কাপড়ের বড় মোকাম। প্রতি সপ্তাহের সোম ও শুক্রবার এখানে হাট বসে। সব মিলিয়ে প্রতিদিন অন্তত পাঁচ হাজার লোকের সমাগম ঘটে এ বাজারে। আর হাটের দুই দিনে প্রতিদিন প্রায় ১০ হাজার মানুষ এখানে আসে।
ভাঙ্গা বাজার থেকে ঢেউটিন বহন করে যাচ্ছিল ভ্যানচালক জলিল মিয়া (৫৫)। তিনি বলেন, বাজারের ভেতরের সড়কে বড় বড় গর্তের পাশাপাশি কাদাপানিতে একাকার। ভ্যান চালাতে অনেক কষ্ট হয়।
ভাঙ্গা বাজারে কেনাকাটা করতে এসে এই উপজেলার চান্দ্রা ইউনিয়নের দীঘলকান্দা গ্রামের সুজন শেখ (২২) বলেন, ‘এত বড় বাজার, কিন্তু কাদাপানিতে নড়াচড়া করা যায় না।’
ভাঙ্গা পৌরসভার কাপুড়িয়া সদরদী মহল্লার বাসিন্দা লিটু ফকির বলেন, দূরদূরান্তে ভাঙ্গা বাজারের নামডাক রয়েছে। কিন্তু সড়ক নষ্ট হওয়ায় বৃষ্টির দিনে বাজারে এসেই সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
ভাঙ্গা বাজারের মুসলিম মিষ্টান্ন ভান্ডারের মালিক মো. সাইফুর রহমান বলেন, বৃষ্টি নামলে বাজারের ভেতরের সড়ক কর্দমাক্ত হয়ে যায়। হাঁটতে, চলতে অসহ্য লাগে। এ কারণে ব্যবসায়ীদের বিক্রিও কমে গেছে।
ভাঙ্গা সরকারি কাজী মাহবুব উল্লাহ কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী আহসান হাবিব বলেন, ভাঙ্গা বাজারে চলাফেরা করতে অনেক কষ্ট হয়। বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের বই, খাতা কিনতে ও পোশাক সেলাই করার জন্য প্রায়ই বাজারে আসতে হয়। বৃষ্টির কারণে বাজারে এসে কাদাপানিতে ভোগান্তিতে পড়তে হয়।
ভাঙ্গার বাজার বণিক সমিতির সভাপতি শহীদুল হক মুন্সী বলেন, ‘আমাদের প্রতিনিয়ত ব্যবসায়ীদের তোপের মুখে পড়তে হয়। সড়ক দুটি আসলেই চলাচলের অনুপযোগী। এ ব্যাপারে একাধিকবার পৌর মেয়রের সঙ্গে কথা বলেছি।’
ভাঙ্গা পৌরসভার মেয়র আবু ফয়েজ মো. রেজা বর্তমানে বিদেশে থাকায় এ ব্যাপারে তাঁর সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে এ বিষয়ে ওই পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র মো. আইয়ুব আলী বলেন, ‘ভাঙ্গা বাজারের দুটি সড়ক দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বিষয়টি আমার জানা। ওই সড়ক দুটি নতুন করে নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আশা করছি দ্রুত সময়ে সব প্রক্রিয়া শেষ করে নির্মাণকাজে হাত দেওয়া যাবে।’