২৬ ঘণ্টায়ও পাওয়া যায়নি সুনামগঞ্জে নৌকাডুবিতে নিখোঁজ মা-মেয়েসহ তিনজনকে

সপ্তাহখানেক আগেও ত্রাণের জন্য সন্তান হাবিবাকে কোলে নিয়ে দোয়ারাবাজারে এসেছিলেন আশ্রয়ণ ঘরের বাসিন্দা জোছনা বেগম। নৌকা ডুবলে সন্তানকে বাঁচাতে গিয়ে জোছনাও সুরমা নদীর স্রোতে ভেসে নিখোঁজ হন। ছবিটি গত সপ্তাহে স্থানীয় এক আইনজীবীর তোলা
ছবি: সংগৃহীত

সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলায় সুরমা নদীতে নৌকা ডুবে নিখোঁজ মা–মেয়েসহ তিনজনের এখনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। নদীতে স্রোত বেশি থাকায় উদ্ধারকাজে বেগ পেতে হচ্ছে।

আজ বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে দোয়ারাবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বদরুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘স্থানীয় লোকজন, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলসহ নদীর আশপাশে খোঁজ করছেন। নদীতে প্রবল স্রোতের কারণে উদ্ধারকাজ বেশ কঠিন। তবু আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’

আরও পড়ুন

গতকাল মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলা সদরের সুরমা নদীর আজমপুর খেয়াঘাট এলাকায় তাঁরা নিখোঁজ হন। উপজেলা সদরে ত্রাণ দেওয়ার খবর পেয়ে নদী পার হয়ে সেখানে যাওয়ার পথে নৌকাডুবিতে তাঁরা স্রোতে ভেসে যান।
নিখোঁজ তিনজন হলেন উপজেলার আজমপুর এলাকায় সরকারের আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা গুলজান বেগম (৬৫), জোছনা বেগম (৩৫) ও তাঁর মেয়ে হাবিবা আক্তার (২)। এর মধ্যে জোছনার গ্রামের বাড়ি উপজেলার সদরের নৈনগাঁও গ্রামে। তাঁর স্বামীর নাম আইন উদ্দিন। আর গুলজান বেগম পশ্চিম মাছিমপুর গ্রামের নুর আলীর স্ত্রী।

প্রত্যক্ষদর্শী আজমপুর গ্রামের বাসিন্দা ইসহাক আলী গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে একটি ছোট নৌকায় করে আটজন নদী পার হয়ে উপজেলা সদরে যাচ্ছিলেন। পাহাড়ি ঢল নামায় নদীতে প্রবল স্রোত ছিল। নৌকাটি মাঝনদী দিয়ে যাওয়ার সময় পানির তোড়ে ডুবে যায়। তখন খেয়াঘাট ও আশপাশের লোকজন কয়েকটি নৌকা নিয়ে দ্রুত সেখানে গিয়ে পাঁচজনকে উদ্ধার করেন। বাকি তিনজন পানির স্রোতে ভেসে যান।

নৌকায় থাকা দিদারুন নেসা (৪০) বলেন, গুলজান বেগম তাঁর ফুফু। উপজেলা সদরে বন্যার্ত মানুষকে সাহায্য দেওয়া হবে খবর পেয়ে একসঙ্গে সবাই সেখানে যাচ্ছিলেন। জোছনার সঙ্গে তাঁর দুই মেয়ে হাবিবা ও আফসা (৭) ছিল। নৌকা ডুবে যাওয়ার সময় জোছনা দুই মেয়েকে ধরতে গিয়ে তিনি নিজেই ডুবে যান। দিদারুন নেসাও পানিতে তলিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন নৌকায় থাকা তাঁর এক মামা তাঁকে বাঁচিয়েছেন। জোছনা বেগমের মেয়ে আফসাকে দোয়ারাবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

দোয়ারাবাজার ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ইনচার্জ) মোহাম্মদ আবদুল হান্নান বলেন, ‘আমরা গতকালও উদ্ধারকাজে ছিলাম, আজও আছি। নদীতে প্রবল স্রোত। তবু আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি।’