নানা বর্জ্যে নোংরা হচ্ছে মৌলভীবাজারের ‘শান্তিবাগ ওয়াকওয়ে’

শান্তিবাগ ওয়াকওয়েতে যেখানে-সেখানে ফেলা হচ্ছে বর্জ্য। বুধবার সকালে মৌলভীবাজারের মনু নদের পাড়েছবি: প্রথম আলো

বর্জ্য ফেলার জন্য কিছু দূর পরপরই প্লাস্টিকের ভ্রাম্যমাণ ডাস্টবিন রাখা। বড় আকারের এসব ডাস্টবিন যেন অনেকের চোখেই পড়ছে না। যাঁর যেখানে খুশি, বর্জ্য ফেলছেন। ফুলগাছের পাশে, ঘাসের ওপরে, ডাস্টবিনের কাছে, মনু নদের পাড় ঘেঁষে বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। নানা বর্জ্যে প্রতিনিয়ত নোংরা হচ্ছে মৌলভীবাজারের মনু নদের পাড়ে স্থাপিত ‘শান্তিবাগ ওয়াকওয়ে’।

আজ বুধবার সকালে ‘শান্তিবাগ ওয়াকওয়ে’ এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, পুরো ওয়াকওয়েতে বিচ্ছিন্নভাবে নোংরা ও আবর্জনার ছড়াছড়ি। ফেলনা প্লাস্টিকপণ্য থেকে শুরু করে অনেক ধরনের কাগজের টুকরা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। আরও পড়ে আছে প্লাস্টিকের ওয়ানটাইম গ্লাস, চিপস, প্লাস্টিকের বোতল, ভাজা বাদাম, চানাচুর, আচার, বিস্কুট, সিগারেটের খালি প্যাকেট, পলিথিনের ব্যাগ, পরিত্যক্ত কাপড় ইত্যাদি। ওয়াকওয়ের মৌলভীবাজার প্রধান ডাকঘর প্রান্ত থেকে মনু নদের সেতু পর্যন্ত নানা রকম নোংরা আবর্জনা চোখে পড়ে।

সম্প্রতি শান্তিবাগ ওয়াকওয়েতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম পরিচালনা করেন কানাডাপ্রবাসী ফুলপ্রেমী নুরুর রহমান এবং অবসরপ্রাপ্ত কলেজশিক্ষক, প্রাবন্ধিক ও সাহিত্যের ছোটকাগজ ‘ফসল’–এর সম্পাদক মো. আবদুল খালিক। ওয়াকওয়েতে আসা লোকজনকে সচেতন ও উদ্বুদ্ধ করতেই ছিল তাঁদের এই কার্যক্রম, যাতে খোলা স্থানে কেউ ময়লা না ফেলে নির্দিষ্ট ডাস্টবিনে বর্জ্য ফেলেন।

ওয়াকওয়েতে বর্জ্যের ছড়াছড়ি দেখে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান নুরুর রহমান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘মনু নদের পাড়ের একটুকরা নিশ্বাসের জানালাকে বিষাক্ত করে তুলছেন এলাকার লোকজন। পৌরসভার সুন্দর একটা বর্জ্য ব্যবস্থাপনা থাকার পরও নবনির্মিত ওয়াকওয়েতে এবং ওয়াকওয়ের নিচে ফেলা হচ্ছে টন টন আবর্জনা।’

প্রতিদিন ভোরে স্বাস্থ্যসচেতন অনেক নারী-পুরুষ দল বেঁধে ওয়াকওয়েতে হাঁটাহাঁটি করতে আসেন। অনেকে একসঙ্গে এখানে ব্যায়াম করেন। বিকেলে বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষ, শিশু, তরুণ-তরুণী এখানে অবসর সময় কাটান ও আড্ডা দেন। বাহারি পণ্যের পসরা নিয়ে বসেন ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীরা। এমনকি রাতের বেলায়ও কেউ কেউ সেখানে আড্ডা দেন, ব্যায়াম বা শরীরচর্চা করেন। নোংরা–আবর্জনার কারণে তাঁদের বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে।

মৌলভীবাজারের শান্তিবাগ ওয়াকওয়ের পাশে আবর্জনার স্তূপ। বুধবার সকালে
ছবি: প্রথম আলো

মৌলভীবাজার পৌরসভা কর্তৃপক্ষ জানায়, মনু নদের পাড়ের শান্তিবাগ এলাকার মনু সেতু থেকে মৌলভীবাজার প্রধান ডাকঘর পর্যন্ত প্রায় ৮০০ মিটার এলাকাকে দৃষ্টিনন্দন করে গড়ে তোলা হয়েছে, যাতে শহরের মানুষ এই খোলা জায়গায় হাঁটাচলা করতে পারেন, বসে অবসর সময় কাটাতে পারেন।

মৌলভীবাজার পৌরসভার মেয়র মো. ফজলুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘ময়লা-আবর্জনা ফেলার জন্য অনেক বিন (ডাস্টবিন) দিলাম। এরপরও মানুষ যত্রতত্র ময়লা ফেলছে। নানাভাবে সচেতন করার চেষ্টা করা হচ্ছে, কিন্তু যেখানে-সেখানে ময়লা ফেলা বাদ দিচ্ছে না। মানুষ সচেতন না হলে যেকোনো জায়গাই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা কঠিন কাজ।’