মতলব উত্তরে বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও মাছ লুটের অভিযোগ
চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় ছেংগারচর পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম প্রধানের বিরুদ্ধে এক জেলের কাছ থেকে ২ লাখ টাকা চাঁদা আদায় এবং তাঁর পুকুরের ৫০ লক্ষাধিক টাকার মাছ লুট করে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত সোমবার ওই জেলে এ ব্যাপারে থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। সেই সঙ্গে আজ বুধবার সকাল ১০টায় ছেংগারচর পৌরসভার ভবন চত্বরে ওই নেতার চাঁদাবাজি ও মাছ লুটের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলনও করেন ভুক্তভোগী ওই জেলে।
অভিযোগকারী ওই জেলের নাম লক্ষ্মণ চন্দ্র দাস (৪৫)। তাঁর বাড়ি উপজেলার কেশাইরকান্দি এলাকায়। অভিযুক্ত জাহাঙ্গীর আলম প্রধানের বাড়ি উপজেলার রুহিতারপাড় এলাকায়। তিনি উপজেলার ছেংগারচর পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক।
সংবাদ সম্মেলনে লক্ষ্মণ চন্দ্র দাস বলেন, তিনি ছেংগারচর পৌরসভার কেশাইরকান্দি এলাকায় একটি ভাড়া করা বাসায় পরিবার নিয়ে বাস করেন। তিনি একজন জেলে ও মৎস্যজীবী। প্রায় ৯ মাস আগে উপজেলার রুহিতারপাড় এলাকার একটি পুকুরে ৪৮ লাখ টাকা খরচ করে বিভিন্ন প্রজাতির ৫৫০ মণ মাছের চাষ করেন তিনি। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হওয়ার পর ছেংগারচর পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম প্রধান তাঁর (লক্ষ্মণ চন্দ্র) কাছে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। ওই চাঁদা না দিলে পুকুরের সব মাছ নিয়ে যাওয়ার হুমকি দেন তাঁকে।
লক্ষ্মণ চন্দ্র দাস আরও বলেন, একপর্যায়ে তিনি ওই বিএনপি নেতাকে ৩ লাখ টাকা চাঁদা দিতে রাজি হন এবং ঋণ করে গত ২০ আগস্ট তাঁকে ২ লাখ টাকা চাঁদা দেন। পরে জাহাঙ্গীর আলম আরও এক লাখ টাকা দাবি করেন। ওই এক লাখ টাকা না দিলে তাঁর জলাশয়ের সব মাছ নিয়ে যাওয়ার আবার হুমকি দেন। ওই এক লাখ টাকা না দেওয়ায় ৫ ডিসেম্বর তাঁর জলাশয় থেকে ৫০ লাখ টাকার মাছ লুটপাট করে নেন জাহাঙ্গীর আলম ও তাঁর লোকজন। ঘটনাটির প্রতিবাদ করলে তাঁকে ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের মেরে ফেলার হুমকি দেন ওই নেতা। এর পর থেকে তিনি ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এ ব্যাপারে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন জানিয়ে লক্ষ্মণ চন্দ্র দাস সরকার, পুলিশ ও প্রশাসনের কাছে সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন।
লক্ষ্মণ চন্দ্র দাসের কাছ থেকে চাঁদা আদায় এবং তাঁর পুকুরের মাছ লুটের অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানার জন্য বিএনপি নেতা জাহাঙ্গীর আলম প্রধানের মুঠোফোন নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে সংযোগ বন্ধ পাওয়া যায়। স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বললে তাঁরা জানান, থানায় লিখিত অভিযোগ করার পর জাহাঙ্গীর আলম কোথায় আছেন, তা তাঁরা জানেন না।
মতলব উত্তর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রবিউল হক বলেন, ওই বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জেলে লক্ষ্মণ চন্দ্র দাসের একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন। ঘটনাটি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবেন। ওই জেলে ও তাঁর পরিবারকে নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছে।