আগৈলঝাড়ায় ঠিকাদারকে মারধর, ছাত্রলীগের ৬ নেতা-কর্মীর নামে আদালতে মামলা
বরিশালের আগৈলঝাড়ায় চাঁদা না পেয়ে ঠিকাদারকে মারধরের অভিযোগে আদালতে নালিশি মামলা হয়েছে। আজ বুধবার বরিশালের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ভুক্তভোগী ঠিকাদার বাদী হয়ে মামলা করার আবেদন জানান।
আদালতের বিচারক আগৈলঝাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) মামলাটি এফআইআর হিসেবে নথিভুক্ত করার নির্দেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ওই আদালতের পেশকার মো. রেজাউল।
আদালতে মামলার আবেদন জানিয়েছেন আগৈলঝাড়ার গৈলা ইউনিয়নের উত্তর শিহিপাশা গ্রামের বাসিন্দা ঠিকাদার সিরাজ সিকদার (৫২)। মামলার আরজিতে ছয়জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন উপজেলা ছাত্রলীগের সদস্য নাঈম সরদার (২০), মহাসিন হাওলাদার (২০), আলিম সরদার (২২), রাকিব হাওলাদার (১৯), আকাশ হাওলাদার (২০) ও মেজর হাওলাদার (১৯)। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও পাঁচজনকে আসামি করা হয়েছে।
উপজেলার গৈলা ইউনিয়নের উত্তর শিহিপাশা গ্রামের প্রবাসী হাবিব সরদারের বহুতল ভবন নির্মাণ ও ব্যবসায় মুনসুর ঘরামীর দ্বিতল ভবন নির্মাণের ঠিকাদার হিসেবে কাজ করছেন সিরাজ সিকদার।
মামলার আরজিতে সিরাজ সিকদার জানিয়েছেন, ‘বিভিন্ন সময় আগৈলঝাড়া উপজেলা ছাত্রলীগের সদস্য নাঈম সরদারের (২০) নেতৃত্বে সদস্য মহাসিন হাওলাদার (২০), আলিম সরদার (২২), রাকিব হাওলাদার (১৯), আকাশ হাওলাদার (২০), মেজর হাওলাদারসহ (১৯) ১১-১২ জন ছাত্রলীগ নেতা-কর্মী আমার কাছে চাঁদা দাবি করে আসছিলেন। টাকা না দেওয়ায় আমাকে বিভিন্ন রকম হুমকি দিয়ে আসছিলেন। ১০ মার্চ আমার কাছে ওই চাঁদাবাজ অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে দুই দিনের মধ্যে তা পরিশোধের আলটিমেটাম দেন। টাকা না দেওয়ায় ওই সন্ত্রাসীরা ১৩ মার্চ সন্ধ্যা ৭টার দিকে গুপ্তের হাট থেকে বাড়ি যাওয়ার পথে হাটের দক্ষিণে পৌঁছালে তাঁরা রামদা, হাতুড়ি, রড, জিআই পাইপসহ ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালান। শরীরের বিভিন্ন স্থানে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করেন।’
সিরাজ সিকদার জানান, ওই হামলাকারীরা তাঁর মুঠোফোন ও ৭০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেন। তাঁর চিৎকার শুনে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসেন এবং তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। এ ঘটনায় তিনি আগৈলঝাড়া থানায় মামলা করতে যান। তবে পুলিশ মামলা নেয়নি।
এসব অভিযোগের ব্যাপারে নাঈম সরদারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির কোনো বিষয় নেই। আমি তাঁর (সিরাজ সিকদার) কাছে টাকা পাব। তা চাইলে গেলে সিরাজ ও তাঁর ছেলে আমাকে মারধর করেছেন। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে আমার সহযোগীরা তাঁকে মারধর করেন।’
আগৈলঝাড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জহিরুল ইসলাম বলেন, ওই ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ নিয়ে কেউ মামলা করতে আসেননি। মামলা না নেওয়ার অভিযোগ সঠিক নয়। আদালতের নির্দেশনা এখনো থানায় আসেনি। নির্দেশনামতো আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।