সিলেটে মধ্যরাতে কাউন্সিলরের বাসভবনে হামলা, আহত ৪

সিলেটে গতকাল মধ্যরাতে কাউন্সিলর আজাদুর রহমানের বাসভবনে হামলার ঘটনা ঘটেছবি: প্রথম আলো

সিলেট সিটি করপোরেশনের ২০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আজাদুর রহমানের বাসভবনে হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে চারজন আহত হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত দেড়টার দিকে নগরীর ভাটাটিকর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আজাদুরের অনুসারীদের দাবি, চাঁদাবাজি-দখলবাজির প্রতিবাদ করায় এ হামলা হয়েছে।

আজাদুর ওই ওয়ার্ডে টানা পাঁচবারের নির্বাচিত কাউন্সিলর ও সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। সেই সঙ্গে সিলেটের আলোচিত ‘টিলাগড় গ্রুপ’ নামের একটি অংশের নেতা হিসেবেও পরিচিত তিনি। এর বাইরে টিলাগড় গ্রুপে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী এবং সুনামগঞ্জ-১ (তাহিরপুর, জামালগঞ্জ, ধর্মপাশা ও মধ্যনগর) আসনের সংসদ সদস্য ও সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রণজিত সরকারের পৃথক দুটি দল আছে।

কাউন্সিলর আজাদুরের অনুসারীরা অভিযোগ করেন, শেখ নজরুল ইসলাম ওরফে বিজয়, রাব্বী, রিয়াজুল, সুহেল, নাসির, সামাদসহ বেশ কয়েকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে অতর্কিতভাবে তাঁর পৈতৃক ভিটায় হামলা চালান। পরে নগরের পূর্ব শাপলাবাগ এলাকায় কাউন্সিলরের নিজ বাসভবনেও হামলা চালিয়ে বাসার জানালার কাচ ভাঙচুর করা হয়।
একই সঙ্গে গতকাল রাতে আজাদুরের ঘনিষ্ঠ অনুসারী ও মহানগর যুবলীগের সদস্য শমশের আলীর বাসায়ও হামলা হয়েছে বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা। খবর পেয়ে আজাদুরের অনুসারীরা জড়ো হলে তাঁদের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন হামলাকারীরা। এতে আজাদুরের ভাইয়ের ছেলে তাহমিদুর রহমান এবং তাঁর অনুসারী হীরক রঞ্জন দে পাপলু, ফয়ছল ও মুতাছির আহত হন।

এলাকায় বিভিন্ন চাঁদাবাজি, হামলা-দখলবাজি চালিয়ে আসছে একটি চিহ্নিত মাদকসেবী চক্র। তাদের বিরুদ্ধে এলাকাবাসী বিভিন্ন সময় আমার কাছে অভিযোগ করেছে। সেসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে আমার অবস্থান ছিল। ওই ক্ষোভ থেকেই তারা হামলা চালিয়েছে।
কাউন্সিলর আজাদুর রহমান

প্রত্যক্ষদর্শীদের কয়েকজন জানান, আজাদুরের বাসায় হামলাকারীদের কেউ কেউ স্থানীয়ভাবে প্রবাসী কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরীর অনুসারী হিসেবে পরিচিত। তবে আজাদুরের বাসায় হামলার খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে তাঁর অনুসারীরা জড়ো হয়ে হামলাকারীদের ধাওয়া দেয়। ধাওয়ার মুখে হামলাকারীরা সেখান থেকে পালিয়ে যান। এরপর কয়েকজন হামলাকারীর বাসায় আজাদুরের অনুসারীরাও হামলার চেষ্টা চালান

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কাউন্সিলর আজাদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘এলাকায় বিভিন্ন চাঁদাবাজি, হামলা-দখলবাজি চালিয়ে আসছে একটি চিহ্নিত মাদকসেবী চক্র। তাদের বিরুদ্ধে এলাকাবাসী বিভিন্ন সময় আমার কাছে অভিযোগ করেছে। সেসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে আমার অবস্থান ছিল। ওই ক্ষোভ থেকেই তারা হামলা চালিয়েছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা করব।’

যাঁরা হামলা করেছেন, তাঁরা চোর-ডাকাত; কোনো গ্রুপের (দল) নন। এ বিষয়ে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আমি সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ করেছি। আজাদুর রহমানের সঙ্গেও আমার কথা হয়েছে।
শফিকুর রহমান চৌধুরী, প্রবাসী কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী

তবে তাৎক্ষণিকভাবে হামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। আর প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘যাঁরা হামলা করেছেন, তাঁরা চোর-ডাকাত; কোনো গ্রুপের (দল) নন। এ বিষয়ে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আমি সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ করেছি। আজাদুর রহমানের সঙ্গেও আমার কথা হয়েছে।’

এ বিষয়ে শাহপরান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি, তদন্ত) ইন্দ্রনীল ভট্টাচার্য জানান, হামলাকারীদের চিহ্নিত করে দ্রুত ব্যবস্থা নেবে পুলিশ।